ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের নান্দাইলে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সৃষ্ট সংঘর্ষে চাচাতো ভাইয়ের হাতে তোফাজ্জল মিয়া (৪৫) ও স্বপন মিয়া (৩২) নামে দুই সহোদর খুন ও শ্বশুর মকবুল হোসেন(৫০) কে যৌতুকের টাকা না পেয়ে জামাই শাহাবুদ্দিন (৩০) কুপিয়ে হত্যা করেছে।

নান্দাইল উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে শুক্রবার ভোরে শেরপুর ইউনিয়নের রাজাবাড়িয়া গ্রামে সৃষ্ট সংঘর্ষে চাচাতো ভাইয়ের হাতে তোফাজ্জল মিয়া (৪৫) ও স্বপন মিয়া (৩২) নামে দুই সহোদর খুন হয়েছে। নিহত তোফাজ্জল ও স্বপন ওই গ্রামের আফসার উদ্দিনের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জমির মালিকানা নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে আক্কাস আলী ও আফসার উদ্দিনের পরিবারের মধ্যে ঝগড়া হয়। এর জের ধরে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তাদের মধ্যে পুনরায় ঝগড়া বাঁধে। এক পর্যায়ে আক্কাস আলীর দুই ছেলে আবুল খায়র ও জহর উদ্দিন দা, বল্লমসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালায়।

এ সময় তারা তোফাজ্জল মিয়া ও স্বপন মিয়াকে ঘটনাস্থলেই পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ আধুনিক হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
নান্দাইল থানার ওসি সাইফুল ইসলাম ফারাজি এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে।

জেলার ফুলবাড়ীয়া উপজেলার বাকতা ইউনিয়নের কৈয়ারচালা মধ্যপাড়া গ্রামের মকবুল হোসেন (৫০) কে যৌতুকের টাকা না পেয়ে জামাই শাহাবুদ্দিন (৩০) কুপিয়ে হত্যা করেছে। জামাই পলাতক রয়েছে। পুলিশ শুক্রবার দুপুর ১২ টার দিকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেছে।

উপজেলার বাকতা ইউনিয়নের কৈয়ারচালা গ্রামের রিকশা চালক মকবুল হোসেনের মেয়ে গার্মেন্টস কর্মী নাজমা খাতুন ভালবেসে ৩বছর আগে বিয়ে করে ত্রিশাল উপজেলার কানিহারী ইউনিয়নের বানিহারা গ্রামের শামছুল হকের পুত্র শাহাবুদ্দিনকে। তাদের ঘরে ১ বছরের নীরব নামের এক পুত্র রয়েছে। জামাই শাহাবুদ্দিন স্ত্রী নাজমা খাতুনকে যৌতুকের ৫০ হাজার টাকা শ্বশুর বাড়ী থেকে এনে দেয়ার জন্য ৩ মাস আগে মারপিট করে স্ত্রীকে বাপের বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয়। গত বুধবার বিকালে মকবুল বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য জামাই বাড়ীতে গেলে বখাটে জামাই শ্বশুড়কে নির্মম ভাবে কুপিয়ে আহত করে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দিনগত রাত আড়াইটার দিকে আন্ধারিয়া পাড়া গ্রামের এজিদুলের সহায়তায় সিএনজি দিয়ে মকবুলকে বাড়ীর নিকবর্তী নছের দোকানে দিয়ে যায়। সে সময় ঘাতক জামাইকে জনতা আটকের চেষ্টা করলে জামাই শাহাবুদ্দিন পালিয়ে যায়। রাতেই মারাত্মক আহত সংজ্ঞাহীন মকবুলকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে দুই দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে শুক্রবার রাতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

নছের দোকানের চায়ের দোকানদার বিপ্লব জানায়, রাতে সিএনজি দিয়ে মকবুলকে নছের দোকানে নিয়ে আসার সময় সিএনজিতে জামাই শাহাবুদ্দিন, এজিদুলসহ ৪ জন লোক ছিল। সংজ্ঞাহীর রিকশা চালক মকবুলের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম থাকায় জামাইকে আটকের চেষ্টা করা হলে ঘাতক জামাই পালিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে ফুলবাড়ীয়া থানার ওসি রিফাত খান রাজিব জানান, লাশের সুরত হাল করার জন্য পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। আমরা শুধু সুরত হাল রিপোর্ট করব। যেহেতু ঘটনা ঘটেছে ত্রিশাল থানায় সে কারনে ত্রিশাল থানায় মামলা হবে।

(এসইএম/এটিআর/অক্টোবর ১০, ২০১৪)