বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলায় প্রেমিকাকে আয়না বেগমকে (১৭) হত্যার অপরাধে প্রেমিক আমজাদ খানকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বাগেরহাট অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক তপন রায় আসামীর উপস্থিতিতে এই দন্ডাদেশ ঘোষনা করেন। এসময় আসামীকে আরও এক লাখ  টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেন বিচারক।

ফাঁসির দন্ডাদেশ প্রাপ্ত আমজাদ খান কচুয়া উপজেলার খলিশাখালী উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত দলিল উদ্দিন ওরফে ধলু খানের ছেলে। নিহত আয়না বেগম কচুয়া উপজেলার একই এলাকার হোসেন আলীর মেয়ে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০১২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী কচুয়া উপজেলার মঘিয়া ইউনিয়নের খলিশাখালী গ্রামের বাবলু নামের এক ব্যক্তির সুপারি বাগান থেকে অজ্ঞাত নামা এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। একইদিন বিষয়ে একটি এজাহার দায়ের করেন কচুয়া থানার সহকারি উপ পরিদর্শক (এএসআই) মিয়ারব হোসেন। অজ্ঞাতনামা এই নারীর পরিচয় ও হতয়াকারীকে শনাক্তে কাজ শুরু করে পুলিশ। ওই বছরের শেষের দিকে পুলিশ প্রেমিকাকে আয়না বেগমের প্রেমিক আমজাদ খানকে আটক করে।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটক আমজাদ খান জানায়, অজ্ঞাতনামা ওই নারীর নাম আয়না বেগম। মুঠোফোনে আয়নার সাথে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের সুবাদে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে বিয়ে করার শর্তে প্রেমিকা আয়নার সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে ওই নারী আমজাদকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। বউ বাচ্চা থাকায় আমজাদ আয়নাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়।

বিষয়টি জানাজানি হলে নিজের ক্ষতি হবে ভেবে আমজাদ ওই নারীকে রাতে বাড়ী থেকে ডেকে এনে মঘিয়া ইউনিয়নের খলিশাখালী গ্রামের একটি সুপারি বাগানে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে চলে যায়। পুলিশ এই হত্যাকান্ডে জড়িত প্রেমিক আমজাদ খানকে আসামী করে ২০১৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারী আদালতে চার্জশিট প্রদান করেন। ১২ জন স্বাক্ষির স্বাক্ষ্য ও পুলিশের চার্জশিটের ভিত্তিতে অপরাধ প্রমানিত হওয়ায় আদালত প্রেমিক আমজাদকে ফাঁসির দন্ডাদেশ প্রদান করেন। একই সাথে আসামীকে আরও এক লাখ টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেন বিচারক।

এই মামলায় রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী ছিলেন এপিপি সীতা রানী দেবনাথ। আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন বিদান চন্দ্র রায়।

(এসএকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২)