গৌরীপুর প্রতিনিধি : আবাহমান বাংলার প্রাচীন দেশজ সংস্কৃতিগুলোর অন্যতম বিনোদন মাধ্যম হচ্ছে যাত্রাপালা। যাত্রাপালার দিয়ে বিনোদনের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয় দর্শকদের মাঝে। যাত্রাপালায় অভিনয়, সংগীত, হাস্যরসের মাধ্যমে সহজবোধ্য করে সাধারণ মানুষের কাছে সমাজের বিভিন্ন বার্তা পৌঁছে দেয়া হয়। সমাজে বদলের হাতিয়ার হিসেবে যাত্রাপালা অনন্য ভূমিকা পালন করে।

এ বিনোদনের মাধ্যই আমাদের সমাজের অন্যায়, অর্জনসহ বিভিন্ন বিষয় সাধারণ মানুষের কাছে তোলে ধরা হতো। কালের আবর্তে ডিজিটাল যুগে আকাশ সংস্কৃতির প্রভাবে আজ হারিয়ে যেতে বসেছে আমাদের এই প্রচীন বিনোদন ঐতিহ্য। ‘আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের অহংকার’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে গৌরীপুরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সোস্যাল ইউনিটি ফর নার্সিং (সান) এর উদ্যোগে যাত্রা উৎসব-২০১৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুই দিন ব্যাপী এ উৎসবে দি নিউ নবরঞ্জন অপেরা ও গৌরীপুরের থিয়েটার অংশগ্রহন করে।

ময়মনসিংহের গৌরীপুর জমিদার বাড়ির দূর্গম-প প্রাঙ্গনে বৃহস্পতি ও শুক্রবার রাতে দু‘দিন ব্যাপী যাত্রা উৎসবের বক্তব্য রাখেন গৌরীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রভাষক শফিকুল ইসলাম মিন্টু, স্থানীয় সাংস্কৃতিক আন্দোলনের প্লাটফর্ম বাংলা মঞ্চের আহ্বায়ক কবি হান্নান কল্লোল, রামগোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও সানের নির্বাহী পরিচালক এইচ এম খায়রুল বাশার, ওবায়দুর রহমান প্রমুখ। প্রথম রজনীতে অনুষ্টিত হয় আবুল ফজল মো. আজাদের পরিচালনায় গৌরীপুর থিয়েটারের শিল্পীবৃন্দের অংশগ্রহণে রঞ্জন দেবনাথ রচিত সামাজিক যাত্রাপালা ‘মেঘে ঢাকা তারা’। দ্বিতীয় রজনীতে মঞ্চায়ন করা হয় সাইফুল ইসলামের পরিচালনায় নিউ নবরঞ্জন অপেরার শিল্পীবৃন্দের অংশগ্রহণে ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায় রচিত ঐতিহাসিক যাত্রাপালা ‘অশ্রু দিয়ে লেখা’।
সান’র নির্বাহী পরিচালক এইচএম খায়রুল বাসার বলেন, আমাদের দেশজ সংস্কৃতি অবিচ্ছেদ্য অংশ যাত্রাপালা। কিন্তু পৃষ্টপোষকতা ও শিল্পীদের প্রতি অবহেলার জন্য এ শিল্প আজ বিলুপ্তির পথে। আমরা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবে এ শিল্পকে এ এলাকায় প্রাণসঞ্চারের অংশ হিসেবে প্রতি বছর যাত্রা উৎসবের আয়োজন করবো।

(এসইএম/এটিঅার/অক্টোবর ১১, ২০১৪)