এসকে সুলতান, আশুলিয়া : সাভারে বাজার বাসস্ট্যান্ডের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে উপর ফুটওভার ব্রিজ পারাপারে বাড়ছে জন দুর্ভোগ। যত্রতত্র পারাপারে ও দুর্ঘটনা রোধে মহাসড়কে বিভাজন দেওয়ার ফলে চাপ বেড়েছে ফুটওভার ব্রিজ গুলোতে। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে পথচারীরা। অতিরিক্ত মানুষের চাপে ওভার ব্রিজ পারাপারে সময় লাগছে কয়েক গুণ। 

এদিকে সড়ক পারাপারের মানুষ বাড়লেও বাড়েনি ব্রিজের সংখ্যা। উল্টো বাসস্ট্যান্ডে দু’টি ব্রিজের মধ্যে পুরাতন ফুটওভার ব্রিজ ভেঙে তার পাশে নির্মিত নতুন ব্রিজ দিয়ে চলাচলে উভয় পাশে একটি করে ওঠানামার সিঁড়ি রয়েছে। প্রায় ৬ মাস ধরে ব্রিজটি দুই পাশের একটি করে সিঁড়ি দিয়ে মানুষ ওঠানামা করায় সারাক্ষণ ভিড় লেগেই থাকে। এছাড়াও ফুটওভার ব্রিজের উপরে ও উভয় পাশে সিঁড়ি মুখে ভাসামান দোকান থাকায় মানুষ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।

সরেজমিনে সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ফুটওভার ব্রিজ দুটি ঘুরে দেখা যায়, সাভার নিউ মাকের্টের পাশের ওভার ব্রিজের ওঠানামার সিঁড়ি খুবই সরু। এছাড়াও সিঁড়ির ওঠানামার মুখে হকারদের ভাসমান দোকানের গাদাগাদি। সেই সাথে ব্রিজের উপরের একটা পাশ জুড়ে প্রায় ২০টির মতো ভাসমান দোকান রয়েছে।

অন্যদিকে, পুরাতন ওভার ব্রিজের পাশে ইউনাইটেড মাকের্টের সামনে নির্মিত নতুন ব্রিজটির ওঠানামার দুটি সিঁড়ি নিয়ে প্রায় ৬ মাস ধরে চালু হয়েছে। অন্য দুটি সিঁড়ি এখনো নির্মান হয়নি। তবে বাকি দু’টি সিঁড়ি নির্মাণ হবে কি না এ বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।

এদিকে মানুষের প্রচুর চাপ থাকায় প্রতিদিনই ভীড় লেগেই থাকে। সবচেয়ে বেশি ভীড় থাকে ছুটির দিন গুলোতে। এছাড়াও সাকালে এবং সন্ধ্যায় নিয়মিত ভিড় থাকে বলে জানিয়েছেন পথচারীরা। এ ব্রিজের সিঁড়ির মুখে এবং উপরে হকারদের ভাসমান দোকান রয়েছে।

ওভার ব্রিজ দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারী এ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দীন বলেন, আগে মানুষ ব্রিজের নিচ দিয়ে পারাপার হতো। কিন্তু এখন সাভার বাসস্ট্যান্ডে এলাকায় সড়ক বিভাজন তৈরি করায় কেউ আর ব্রিজ ছাড়া চলাচল করতে পারে না। এজন্য প্রতিদিন ভীড় লেগেই থাকে। এজন্য এই বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আরো দু’টি ওভার ব্রিজের প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

ওভার ব্রিজের একটি করে ওঠানামার জায়গা থাকায় প্রতিদিন ভোগান্তির শিকার হওয়া গামের্ন্টস কর্মী সিমা খাতুন ক্ষোভ ঝাড়েন। তিনি বলেন, একটি মাত্র সিঁড়ি দিয়ে পারাপার হতে কত কষ্ট হয় আমাদের তা কি আপনারা জানেন। গার্মেন্টস ছুটির পরে এই ওভার ব্রিজ পার হতে আমাদের আধা ঘণ্টা লেগে যায়।

সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকার ব্যবসায়ী জালাল উদ্দীন বলেন, আমাদের সারা দিনই রাস্তা পারাপার হওয়া লাগে। কিন্তু এই ওভার ব্রিজে সব সময় ভিড় লেগেই থাকে। তার উপর আবার হকারও বসে। এজন্যই মুলত আরও ভিড় বেশি হয়। মাঝে মাঝে পুলিশ এসে হকারদের উচ্ছেদ করলেও তার কিছুক্ষণ পর আবার সেই আগর অবস্থায় ফিরে আসে। তবে তিনি হকারদেরও পুর্নবাসনের দাবি জানান।

তবে সাভার বাসস্ট্যান্ডের এই একটি ওভার ব্রিজই শুধু ওঠানামার উভয় পাশে একটা সিঁড়ি না। সাভার পৌর এলাকায় এরকম সিঁড়ি ওয়ালা ব্রিজ রয়েছে থানা রোডের মুখে এবং সিআরপি গেইটের সামনে নির্মিত ব্রিজটিরও একই অবস্থা।

এদিকে ওভার ব্রিজ গুলো পারাপারে জনগণের ভোগান্তির কথা শিকার করে পৌর মেয়র হাজী আব্দুল গণি বলেন, আমি সড়ক ও জনপদ বিভাগ এবং সেতু মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করবো। যাতে সাভার বাসস্ট্যান্ডের মতো জনবহুল স্থানে আরো ২ থেকে ৩টি ওভার ব্রিজ নির্মাণ করে মানুষের ভোগান্তি দূর করে। বিশেষ করে মডেল মসজিদের সামনে একটা ওভার ব্রিজ খুবই দরকার বলে মনে করেন তিনি। সেই সাথে রেডিও কলোনি বাসস্ট্যান্ড থেকে ব্যাংক টাউন পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণের জন্য তিনি চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে জানান।

(এসকেএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২২)