স্টাফ রিপোর্টার : দেশে প্রতিদিন বাড়ছে বৈষম্য। গরিব হচ্ছে আরও গরিব, বড়লোক হচ্ছে আরও বড়লোক। গরিবের সম্পদ না বাড়লেও বাড়ছে ধনীদের সম্পদ। কিন্তু দরিদ্র মানুষের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। বৈষম্য দূর করার জন্যই স্বাধীন হয়েছে দেশ। কিন্তু জবাবদিহিহীন একটি সরকার চলছে। দুর্নীতির কোনো শেষ নেই। যার যে দায়িত্ব, সে সেই দায়িত্ব পালন করছে না।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি কাদের (২৪ সেপ্টেম্বর) শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামে উত্তর জেলা জাতীয় পার্টি আয়োজিত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং জিয়া উদ্দিন বাবলুর স্মরণসভায় প্রধান অথিতির বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত স্মরণ সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন উত্তর জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব সফিক উল আলম চৌধুরী।

জিএম কাদের বলেন, যারা দুর্নীতিগ্রস্ত তাদের সর্বস্তরে উত্থান ঘটছে, সব জায়গায় সম্মানিত হচ্ছে। তারা বিভিন্ন স্থানে মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে। তারা সৎ মানুষদের নাজেহাল করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। দেশে সুশাসনের অভাব হয়েছে। দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালন হচ্ছে না। বরং দুষ্টের পালন শিষ্টের দমন হচ্ছে।

দেশে গণতন্ত্র নেই উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, প্রজাতন্ত্রের মালিক হচ্ছে দেশের সাধারণ জনগণ। জনগণই সরকার বানায়। তাই সরকারের বিরোধিতা করার অধিকার জনগণের রয়েছে। সরকারের ভালো কাজের যেমন প্রশংসা করার অধিকার রয়েছে, তেমনি মন্দ কাজের নিন্দা করারও অধিকার জনগণের রয়েছে। সরকার পরিবর্তন করার অধিকারও জনগণের রয়েছে। গালাগাল করার অধিকারও জনগণের রয়েছে। জনগণের সমালোচনাকে সুচতুরভাবে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। এসব কারণে জবাবদিহিতার অভাব হচ্ছে।

বাংলাদেশ দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, যে মেগা প্রজেক্টগুলো হচ্ছে, সেগুলোর ফিজিবিলিটি হয়েছে কি না, সন্দেহ রয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাই করা হলেও আমরা যে ব্যয় ধরে প্রকল্প শুরু করি, শেষ করি অনেক বেশি ঋণ করে। কোনো প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ঠিক করি, কিন্তু যখন তার চেয়ে তিন-চারগুণ বেশি খরচ করা হয়, এ সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কোনো অর্থ হয় না। তখন সম্ভাব্যতাহীন একটি প্রজেক্টে পরিণত হয়।

তিনি বলেন, মেগা প্রজেক্টগুলোর বিনিয়োগে যে আয় ধরা হয়েছে, তারচেয়ে ব্যয়ের পরিমাণ বেশি। এ ব্যয়ের দেনার ভার বাংলাদেশ সহ্য করতে পারবে না। বাংলাদেশে সব বড় বড় যেসব প্রজেক্ট জবাবদিহিহীনভাবে তৈরি হয়েছে, সবগুলো প্রজেক্টকে বিপুল পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে বলে সন্দেহের অবকাশ আছে। যখন একটি মেগাপ্রজেক্ট হয়, তখন সুইস ব্যাংকে এ দেশের হাজার কোটি টাকা জমা হয়। এই টাকা কোথা থেকে আসে?

সীমান্তে মিয়ানমারের উসকানির বিষয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, মিয়ানমার যখন তখন বোমা ফেলছে। যখন তখন আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করছে। দেখে মনে হচ্ছে, আমাদের কোনো শক্তি নেই। কোনো নীতিও নেই। আমরা ব্যর্থ হয়েছি কূটনৈতিকভাবে সমস্যার সমাধান করতে। সেখানে মিয়ানমারের উসকানি দিনের পর দিন বাড়ছে। আমাদের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে আন্তর্জাতিকভাবে কোনো সুফল পাচ্ছি না। কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারছি না।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২)