স্টাফ রিপোর্টার : পরিবেশের উন্নয়নের জন্য যেমন পুরস্কারের ব্যবস্থা থাকা দরকার, তেমনি পরিবেশ দূষণে মাঠপর্যায়ে ক্ষুদ্র শাস্তির ব্যবস্থাও রাখতে হবে বলে মনে করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার।

রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানের জারা কনভেশন সেন্টারে ‘ঢাকা শহরের বায়ু দূষণরোধ: যুবদের ভাবনা ও ঘোষণা’ শিরোনামে এক জাতীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ আয়োজিত সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, শের-ই বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, তিতুমীর কলেজসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজের তরুণ শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন ক্ষেত্রের যুবরা অংশ নেন। এ সময় তারা নিজেদের মতামত ও ভাবনা প্রকাশ করেন।

সেমিনারের প্রথম পর্বে মূল প্রবন্ধের ওপর উন্মুক্ত আলোচনা হয়। পাশাপাশি ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের ৫০ বছরের পথচলার তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

প্রথম পর্বে শিক্ষার্থী ও বিশিষ্টজনদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্যানেল আলোচনা হয়। এই পর্বে অংশ নেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাইফুল মোমেন, স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আহমেদ কামরুজ্জামান, ড. লেলিন চৌধুরী এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ থেকে চন্দন জেড গোমেজ। এই পর্ব সঞ্চালনা করেন অর্চি রহমান।

প্যানেল আলোচনায় বিশিষ্টজনেরা ঢাকা শহরের বায়ু দূষণের বিভিন্ন কারণ, তার ফলাফল ও কীভাবে এর প্রতিকার করা যায় সে বিষয়ে আলোকপাত করেন। এছাড়া এই সমস্যা সমাধানে সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তরুণ শিক্ষার্থী ও যুব সমাজ কী ভূমিকা পালন করতে পারে সে বিষয়েও দিক নির্দেশনা দেন।

সেমিনারের প্রধান অতিথি উপমন্ত্রী এসময় বলেন, পরিবেশের উন্নয়নের জন্যে আমাদের কথার চেয়ে কাজ বেশি করতে হবে। সমাজের প্রত্যেক স্তরের মানুষকে এই বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত করার পাশাপাশি তাদের সচেতন করতে হবে। যদি জনগণকে সম্পৃক্ত না করতে পারি তাহলে আমাদের মন্ত্রণালয়ের কোনো পরিকল্পনাই বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। পরিবেশের উন্নয়নের জন্য যেমন পুরস্কারের ব্যবস্থা থাকা দরকার, তেমনি পরিবেশ দূষণে মাঠপর্যায়ে ক্ষুদ্র শাস্তির ব্যবস্থাও রাখতে হবে।

দুপুরের পরে দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয় জাতীয় অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাতের আলোচনার মাধ্যমে। জলবায়ু পরিবর্তন ও বায়ু দূষণরোধে যুবাদের গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ভবিষ্যতের জন্য জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে আমাদের যুবাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন আনতে হবে এবং তাদেরই দায়িত্ব নিতে হবে। আমাদের বেশি বেশি শহরকেন্দ্রিক সমস্যার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। কারণ শহুরে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিনিয়ত, যা পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। এর পাশাপাশি আমাদের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো পরিবেশবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আমাদের পরিবেশ সম্পর্কিত যেসব আইন রয়েছে সেগুলোকে বাস্তবায়নের পাশাপাশি মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।

এই পর্বে আরও আলোচনা করেন অপরাজেয় বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ওয়াহিদা বানু। সেমিনার শেষ হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনার পাশাপাশি ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের ইয়ুথ ভিশন ২০২৩ সম্পর্কিত বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে।

সেমিনারে আরও অংশ নেন- ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদুর রহমান, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. মাহফুজুর রহমান, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ড. সাদাত আলম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আদিল মোহাম্মদ খান, ইয়ুথ ফোরাম বাংলাদেশের সভাপতি সজিব মিয়া এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের টেকনিক্যাল ম্যানেজার যোয়ান্না ডি রোজারিও ও সাগর মারান্ডি।
(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২)