শেখ ইমন, শৈলকুপা : প্রতিবন্ধীকে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে গ্রাম্য সালিসে হাত-পা বেধে করা হয়েছে মারধোর। দাবি করা হয়েছিলো ২ লাখ টাকা। পরে বাড়িতে পোষা ছাগল বিক্রি করে ২০ হাজার টাকা তুলে দেয়া হয়েছে গ্রাম্য মাতব্বরদের হাতে। তবুও রক্ষা হয়নি। দিতে হবে আরো ৫০ হাজার টাকা। নইলে ছাড়তে হবে গ্রাম। বর্তমানে টাকা জোগাড় করতে না পারায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অভিযুক্ত। ঘটনাটি ঝিনাইদহের শৈলকুপার ত্রিবেনী গ্রামের। আর অভিযুক্ত ঐ গ্রামের শাহজাহান শাহ এর ছেলে উজ্জল শাহ।

ভুক্তভোগী উজ্জল শাহ জানান, গত (১৭ সেপ্টেম্বর) শনিবার সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া জেলার মধুপুর বাজারে প্রতিবন্ধী ফুফাতো বোন এর সাথে দেখা হয় উজ্জলের। সন্ধ্যা হওয়ায় তাকে নিয়ে অপর আত্মীয় ত্রিবেনী গ্রামের পান্না শাহ এর বাড়িতে নিয়ে যায় উজ্জল। কিছু সময় পর আকস্মিক পান্না শাহ বলে তুমি মেয়েটিকে ধর্ষণ করেছো। এরপর লোকজন ডেকে গ্রাম্য সালিশের ব্যবস্থা করা হয়। ঐ গ্রামের মিলন মেম্বরের নেতৃত্বে পান্না শাহ, ছারোয়ার মালিথা, ইউনুস, আকবর, খাইরুল মাতব্বর সহ ১৫-২০ জন আফাজ উদ্দীনের বাড়িতে সালিশের ব্যবস্থা করে। সালিশের মধ্যে অভিযুক্ত উজ্জলকে হাত পা-বেঁধে মারপিট করা হয়। একপর্যায়ে মাতব্বররা সালিশে রায় দেন ২ লক্ষ টাকা দিতে হবে। নাইলে এলাকা ছাড়তে হবে। পরে পরিবারের পিড়াপিড়িতে তা ৮০ হাজার টাকা ধার্য হয়। এরপর গত বৃহস্পতিবার বাড়িতে পোষা ছাগল বিক্রি ও ধার করে ২০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয় ঐ গ্রামের খাইরুলের হাতে। কিন্তু মানতে নারাজ তারা। তাদের দাবী দিতে হবে আরো ৫০ হাজার টাকা। টাকার যোগান দিতে না পারায় বর্তমানে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অভিযুক্ত উজ্জল।

প্রতিবন্ধী মেয়ের আত্মীয় পান্না শাহ বলেন, মেয়েটি আমার আত্মীয়। উজ্জল তাকে ধর্ষণ করেছে। আমরা তার বিরুদ্ধে মামলা করবো।

তবে ত্রিবেনী গ্রামের ১নং ওয়ার্ডের মিলন মেম্বার সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সালিশ হয়েছিল উজ্জলকে নিয়ে তবে কোন টাকা দাবী করা হয়নি। আমরা কোন টাকা নেয়নি।

এ ব্যাপারে ত্রিবেনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেকেন্দার মোল্লা বলেন, উজ্জলের পরিবার আমার কাছে এসেছিল। কারও উপর অভিযোগ তুলে এভাবে টাকা দাবি করা ঠিক না। এটা সম্পূর্ণ অন্যায় ও বেআইনী কাজ।

শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, এমন ঘটনা কাম্য নয়। এ ব্যাপারে এখনও কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এসআই/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২)