সালথা প্রতিনিধি : ফরিদপুরের সালথা উপজেলার নটখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ফরিদা পারভিনের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন আসবাবপত্র ক্রয়ের নামে ভুয়া বিল ভাউচার, ৫ লক্ষ টাকার মূল্যের স্কুলের গাছ কেটে সংশ্লিস্ট কতৃপক্ষের যোগসাজশে বিক্রি, সংস্কারের জন্য বরাদ্দ এনে নামে মাত্র কাজ দেখিয়ে ওই প্রধান শিক্ষিকা হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক লাখ টাকা। ইতিমধ্যে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের বরাবর তার অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য শাহিদ মাতুব্বার। প্রধান শিক্ষিকার এমন কর্মকান্ড নিয়ে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।

স্কুল ম্যানেজিং কমিটি সদস্য শাহিদ মাতুব্বার করা অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, নটখোলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ফরিদা পারভীন এই স্কুলে যোগদান করার পর থেকে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। তার এই অনিয়ম ঢাকতে নিজের মতো করে যোগাড়দিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক বাবুল মোল্যাকে কৌশলে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বানিয়েছেন। এই প্রতিষ্ঠান টি এই গ্রামের মানুষ অনেক পরিশ্রম করে ১৯৪২ইং সালে দাঁড় করিয়েছেন। স্থানীয়দের সহযোগিতা অনেক বৃত্তবানের অর্থ অনেকেই জমিদাতা আছেন তাদেরকে বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়ে অন্য গ্রামের যোগারদিয়া হাই স্কুলের এক শিক্ষককে কৌশলে সভাপতি নির্বাচন করেন। তাতে করে স্থানীয়দের অবমাননা করেছেন তিনি। সভাপতি হওয়ার যোগ্যতা এই গ্রামের অনেকের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু তিনি অনিয়ম করে নিজের কুক্ষিগত করার জন্য এমনটি করেছেন। সভাপতি নির্বাচিত করার পরপরই তার সাথে যোগসাজশে ৫ লক্ষ টাকার মূল্যের ১২টি মেহেগুনি গাছ বিক্রি করেন তিনি। তাতে ম্যানেজিং কমিটির অন্যান্য সদস্যরা রাগে ক্ষোভে ফুঁসছেন। অপরদিকে স্কুলের কিছু জায়গা ছেড়ে দিয়ে বিশেষ কোন ব্যক্তিকে সুবিধা দেওয়ার জন্য বাউন্ডারী ওয়াল নির্মান করেছেন। এমনকি বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ২ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকার উন্নয়ন মূলক কাজ পেলেও তা নামে মাত্র কাজ দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ ওই ম্যানেজিং কমিটির সদস্যর।

প্রধান শিক্ষিকা ফরিদা পারভীন সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি গাছ কাটার এখতিয়ার রাখি না। উপজেলার কর্মকর্তাদের মাধ্যমে নিয়ম অনুযায়ী গাছ কাটা হয়েছে। আর সংস্কারের কাজ ঠিকদারের মাধ্যমে করা হয়েছে। এখানে আমার কোন হাত নেই।

অত্র বিদ্যালয়ের সভাপতি বাবলু মোল্যাকে মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সালথা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নিয়ামত হোসেন বলেন, লিখিত অভিযোগের অনুলিপির একটি কপি পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তদন্তের জন্য উপজেলার এক সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে বলা হয়েছে। তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত সঠিকভাবে বলতে পারছিনা।

ফরিদপুর প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ অহিদুল আলম বলেন, নটখোলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক এর বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা কখন কারো পক্ষ পাতিত্ব করবো না।

(এএন/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২)