রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : লাগেজ ব্যবসায়ীদের শুল্ক ফাঁকির প্রতিবাদ করায় পাচারকারিদের হামলায় জখম হওয়া সাংবাদিকের দায়েনকৃত মামলার আসামীরা গত ৭ দিনেও গ্রেপ্তার হয়নি। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

ভোমরা বন্দরের কয়েকজন ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দা জানান, ভোমরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম ক্ষমতা দেখিয়ে মানববপাচার ও মাদক মামলার আসামী ভোমরার জাকির হোসেনকে দিয়ে পাসপোর্টে আসা ভারতীয় লাগেজ ব্যবসায়িদের কম শুল্কে মালামাল গন্তব্যস্থলে পৌছে দেওয়ার নাম করে প্রতিদিন দুই থেকে তিন লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছেন। কয়েকজনের মাল কাস্টমসে ধরিয়ে দেওয়ায় ভোমরা বন্দরের হ্যাণ্ডেলিং শ্রমিক ইউনিয়নের শ্রমিক কালুকে দুই মাস আগে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেয় জাকির ও তার সহযোগীরা। এরপরও লাগেজ ব্যবসায়িদের শুল্ক ফাকি দিয়ে নিজেদের পকেট ভর্তি করতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে বোকা বানিয়ে আসছিল জাকির ও আনারুল।

সাংবাদিক জিয়াউর রহমান ও মোতালেব এর প্রতিবাদ করায় মকুল ও মতিয়ারকে দিয়ে সম্প্রতি অনলাইনে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করায় জাকির ও আনারুল। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ নেতা আনারুল ও জাকির বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্ণীতির প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় তারা ক্ষুব্ধ হন। একপর্যায়ে কয়েকজন লাগেজ ব্যবসায়িকে কাস্টমসে না যেতে দিয়ে তাদের কাছ থেকে রাজস্ব এর অর্ধেক টাকা নিয়ে গন্তব্যস্থলে পৌছে দেওয়ার সময় মোটর সাইকেল থেকে নামিয়ে নেয় কাস্টমস ও বিজিবি। তাদের কাছ থেকে বিদেশী মদসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়। এতে বেপরোয়া হয়ে ওঠে আনারুল ও জাকির।

তারা আরো জানান, গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার গয়েশপুর গ্রামের আব্দুর জব্বারের ছেলে সাংবাদিক মোতালেব সরদার কাস্টমস অফিসের পাশে ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল স্ট্যাণ্ড থেকে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে একটি ভ্যানে ওঠেন। এ সময় প্রায় অশিক্ষিত আওয়ামী লীগ নেতা আনারুল ইসলাম মানব পাচার মামলার আসামী জাকির তাকে ওই মোটর সাইকেল স্ট্যাণ্ডে ডাকেন। লাগেজ ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছিস কেন বলে তিনি তার কাছে এক লাখ টাকা চাদাা চান। প্রতিবাদ করায় মোতালেবকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করেন আনারুল ও জাকির। এ সময় তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা কেড়ে নেওয়া হয়। তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সাংবাদিকদের প্রম্নের জবাবে আনারুল ইসলাম বলেন, পাওনা টাকা না দেওয়ায় মোতালেবকে মারপিট করা হয়েছে।

ভোমরার মজিদ, খালেক, নাসিরসহ কয়েকজন জানান, এক সময় আনারুলের খাওয়া জুটতো না। বর্ষার আগেই ঘরে পানি পড়তো। নাশকতার মামলায় নিরীহ মানুষ ও ব্যবসায়িদের জড়িয়ে দেওয়ার নামে ও মামলা থেকেব অব্যহতি করিয়ে দেওয়ার নামে আনারুল এখন দোতলা বাড়ি বানানোর পাশাপাশি অগাধ সম্পদের মালিক হয়েছেন। এ ছাড়া শুল্ক ফাকি দিয়ে লাগেজ ব্যবসায়িদের নিরাপদ স্থানে পৌছে দেওয়ার নামে মাদক ও মানব পাচার মামলার আসামী জাকির হোসেনকে নিয়ে তিনি একটি সিণ্ডিগেট তৈরি করেছেন। প্রতিবদিকারি সংবাদিককে পিটিয়ে মামলার আসামী হয়েও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সাংসদ ও আওয়ামী লীগের জেলা পর্যায়ের এক বড় নেতা থাকতে উপপরিদর্শক দেব কুমার তার তার টিকি ছুতে পারবে না বলে প্রকাশ্যে বলে বেড়াচ্ছে আনারুল।

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা দেব কুমার দাসের সঙ্গে শুক্রবার বিকেল ৫টা ২৩ মিনিটে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

(আরকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২২)