আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : নগরীর বিসিকে এবার পলিথিন পুড়িয়ে পরীক্ষামূলক জ্বালানি তেল উৎপাদন করে সফলতা পেয়েছেন তরুণ উদ্যোক্তা এমএ রশিদ আরিফ। ব্যয় হিসেব করে যদি প্রকল্পটি লাভজনক হয়, তাহলে বড় পরিসরে উৎপাদনে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন বিসিক নগরীতে অবস্থিত মেসার্স হাসিনা কুটির শিল্পের পরিচালক এমএ রশিদ আরিফ।

তরুণ উদ্যোক্তা আরিফ বলেন, ফেলে দেওয়া পলিথিন ও প্লাস্টিক রিসাইকেল করে জ্বালানি তেল তৈরির একটা প্রকল্প আমরা ইতোমধ্যে হাতে নিয়েছি। যেটা এখনও পরীক্ষামূলক অবস্থায় রয়েছে। আপাতত আমরা কোন ধরনের পলিথিনে কতটুকু জ্বালানি তৈরি হয় এবং কতটুকু খরচ হয় তার হিসেব করছি। আর খরচের পর কতটুকু আউটপুট আসবে এবং তা থেকে কতটুকু লাভ করতে পারি সেটাও দেখছি। প্রকল্পটি যদি লাভজনক হয় তাহলে বড় আকারে একটি প্লান্ট তৈরি করা হবে। যেখানে প্রতিদিন এক থেকে দুই হাজার কেজি পলিথিন-প্লাস্টিক থেকে আমরা জ্বালানি তেল তৈরির চেষ্টা করবো।

সূত্রমতে, বড় টিনের ড্রামে পলিথিন ভরে মুখ বন্ধ করে আগুনের তাপ দেওয়া হয়। তাপে ড্রামের সাথে লাগানো পাইপ দিয়ে বেরিয়ে আসা পদার্থ প্রথমে অন্য একটি সিলিন্ডারে ঢুকছে। এরপর সেখান থেকে পাইপের মাধ্যমে পানি ভর্তি ড্রামের ভেতর (কিছুটা শীতল করার জন্য) হয়ে আলাদা আলাদা সিলিন্ডার কাটা পাত্রে প্রথমে ডিজেল, পরে পেট্রোল তারপর অকটেন বের হচ্ছে। এছাড়া আলাদাভাবে গ্যাসও বের হয়ে আসছে। যে গ্যাসের মাথায় আগুন ধরিয়ে দিয়ে প্রক্রিয়ার মাঝে থাকা একটি সিলিন্ডারেও তাপ দেওয়া হচ্ছে।

আরিফ আরও বলেন, কিছুদিন আগে ইউটিউবে দেখতে পাই দেশ ও বিদেশে প্লাস্টিক ও পলিথিন থেকে জ্বালানি তেল উৎপাদন করা হচ্ছে। তাদের টিউটরিয়াল দেখে পরীক্ষামূলকভাবে প্লানটি প্রস্তুত করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমার পরবর্তী পরিকল্পনা হচ্ছে প্রকল্পটিকে শতভাগ কার্বনমুক্ত হিসেবে বাস্তবায়ন করা। তাই এটাকে আরও নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব করার জন্য আমাদের আরও কাজ করতে হবে। এজন্য সরকার ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা প্রয়োজন। আর এ সহযোগিতা প্রাপ্তির পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে পরামর্শ পেলে প্রজেক্টটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।

বিগত ১৫ দিন ধরে কাজ শুরু করা প্রকল্পে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে জানিয়ে আরিফ বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি যথেষ্ট আশাবাদী, এটা লাভজনক একটি ব্যবসা হবে। আমি শুরু করেছি, আমার পাশাপাশি আরও কেউ যদি আগ্রহী হয় তাহলে মনে হয় পরিবেশ থেকে ব্যবহৃত ফেলে দেওয়া পলিথিন ও প্লাস্টিক রিমুভ করা সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে পরিবেশ থেকে ক্ষতিকারক পলিথিন ও প্লাস্টিক ধ্বংস হয়ে যাবে।

(টিবি/এসপি/সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২২)