প্রসেনজিৎ বিশ্বাস, নগরকান্দা : ছোঁয়াচে কনজাংকটিভাইটিস বা চোখের প্রদাহ, স্থানীয়ভাবে যা ‘চোখ ওঠা’ নামে পরিচিত। আগামী দুই থেকে তিন মাস এই রোগের প্রকোপ থাকতে পারে। নগরকান্দা উপজেলায় প্রায় ঘরে ঘরে ‘চোখ ওঠা’ রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ‘চোখ ওঠা’ রোগ। আতঙ্কিত হওয়ার পর্যায়ে না গেলেও সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

পুরাপাড়া ইউনিয়নের দফা গ্রামের বাসিন্দা লিয়াকত হোসেন উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে বলেন, ‘দুই দিন ধরে আমার চোখ উঠেছে। আমার ভাই বোন সহ পরিবারের সকল সদস্যের চোখ উঠেছে। সারাক্ষণ চোখে জ্বালাপোড়া করে।’ একই অবস্থায় ব্রাহ্মণডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা আতিয়ার রহমান।

তিনি বলেন, ‘আমার প্রথমে চোখে ফুলে যায় এবং পরে চোখে জ্বালাপোড়া শুরু হয়ে, চোখ ঝাপসা দেখা ও পানি পড়ে , জ্বরও আসছে।পরে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা আক্রান্ত হয়েছে।’

এ সময় নগরকান্দা উপজেলার সিনিয়র সাংবাদিক দৈনিক ভোরের কাগজ এর প্রতিনিধি নিজাম নকিব বলেন, গত দুইদিন ধরে ঘর থেকে কোন কাজে বের হতে পারছিনা, প্রচুর পরিমাণ যন্ত্রণা করছে, গতবছরের তুলনায় এ বছর বেশি মহামারী ধারণ করছে।

এ বিষয়ে পুরাপাড়া বাজারে ঔষধ ব্যাবসায়ী মেসার্স মল্লিক ফার্মেসি মোঃ শামীম মল্লিক উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে জানান, আজ প্রায় দুই শতাধিক এর ও বেশি মানুষ আমার কাছে চোখের ড্রপ কিনতে আসেন, কিন্তু চোখের ড্রপ কোম্পানির সাপ্লাই না থাকায় আমি বিক্রি করতে পারিনি।

উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা: অভিজিত সাহা উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমার হসপিটালে স্টাফদের গত কয়েক দিনে বেশ কয়েক জন আক্রান্ত হয়েছে। দ্রুত ছড়াচ্ছে রোগটি। শুধু নগরকান্দা নয়, দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও এমন হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এ রোগ নিয়ে তো আর কেউ হাসপাতালে ভর্তি হয় না। বেশির ভাগ মানুষই ফার্মেসিতে গিয়ে সাধারণ ড্রপ দিয়েই চিকিৎসা সারছে। সে কারণে আক্রান্তদের সংখ্যা বলা মুশকিল। তবে আমার মনে হচ্ছে, প্রতি ঘরেই কেউ না কেউ আক্রান্ত। পরিবেশদূষণ থেকে হয়তো এবার এ রোগের ভাইরাস বেশি ছড়াচ্ছে।’

এ বছর এই রোগে আক্রান্ত রোগী প্রচুর পাওয়া যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহে হাজারের বেশি রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিনই হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এই রোগটি আরো দুই থেকে তিন মাস অতিবাহিত হতে পারে।এ জন্য আমাদের প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিক এ বিষয়ে জনসচেতনতা করার লক্ষে লিফলেট ও মৌখিক প্রচার প্রচারণা রয়েছে।

এ জন্য রোগীকে সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, বাইরে গেলে কালো চশমা পরা, সে যে হাত দিয়ে চোখ পরিষ্কার করছে, সে হাত দিয়ে অন্যের সাথে হ্যান্ডসেক না করা। পরিষ্কার টিস্যু বা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে চোখ পরিষ্কার করাসহ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

(পিবি/এসপি/অক্টোবর ০১, ২০২২)