বিশেষ প্রতিনিধি, মাদারীপুর : মাদারীপুরের রাজৈরে কথিত চুরির অভিযোগ এনে দোকান থেকে তুলে নিয়ে দুইদিন আটকে রেখে ফল ব্যবসায়ী রবিউল শেখকে মধ্যযুগীয় পাশবিক কায়দায় নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় শুক্রবার রাতে উদ্ধারের পর ওই ব্যবসায়ীকে রাজৈর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নির্মম এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে শনিবার মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। পাশাপাশি সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন স্বজনরা। এরইমধ্যে প্রধান অভিযুক্ত সুমন শেখকে গ্রেফতার করেছে রাজৈর থানা পুলিশ। গ্রেফতার সুমন রাজৈর উপজেলার ঘোষালকান্দি গ্রামের মৃত ফজলু শেখের ছেলে।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ীর ওপর মধ্যযুগীয় কায়দায় চালানো হয় পাশবিক নির্যাতন। প্রচন্ড ব্যাথার যন্ত্রণায় হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন ফল ব্যবসায়ী রবিউল শেখ। ভুলতে পারছেন না নির্মম নির্যাতনের কথা। ভুক্তভোগী রবিউল শেখ (৩০) রাজৈর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের ঘোষালকান্দি এলাকার মৃত খোকন শেখের ছেলে ও সে টেকেরহাট বন্দর এলাকায় ‘মায়ের দোয়া ফল ভান্ডার’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

পুলিশ জানায়, কথিত চুরির অভিযোগ এনে বুধবার রাতে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দর থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় রবিউল শেখকে। পরে পাশর্^বর্তী গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার হরিশ্চর এলাকার একটি ঘরে আটকে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দার উলঙ্গ করে পাশবিক নির্যাতন চালায় ৪-৫ জন সুবিধাবাদী লোক। বিভিন্নভাবে তার উপর পাশবিক নির্যাতন চালায় বলে অভিযোগ রবিউলের। স্থানীয়রা বিষয়টি বুঝতে পেরে পুলিশকে খবর দেয়। শুক্রবার রাতে রবিউলকে উদ্ধার করে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে পুলিশ। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবীতে শনিবার টেকেরহাট বাসস্ট্যান্ডে মানববন্ধন করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।

অভিযুক্ত সুমন শেখ জানায়, আমার মামার গ্যারেজ থেকে ইজিবাইক চুরি হয়। সন্দেহভাজন হিসেবে রবিউলকে অন্যান্য লোকের সাথে আমিও জিজ্ঞাসাবাদ করি। এসময় আমার গ্রামের সম্মান রক্ষার্থে অন্যান্যদের সাথে আমিও কলার ডগা দিয়ে দুটি বারি দেই।

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. হামিদা আক্তার বলেন, রবিউলের উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। তার অবস্থা স্থীতিশীল। রবিউলের শরীরে মারধর ও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

মাদারীপুরের রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন জানান, এরই মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত সুমন শেখকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকিদের ধরতে চলছে অভিযান।

(এএসএ/এএস/অক্টোবর ০১, ২০২২)