স্টাফ রিপোর্টার : শঙ্খ, উলুধ্বনি, কাঁসর ঘণ্টা ও ঢাকের তালে সারাদেশে উদযাপন হচ্ছে মহাসপ্তমী। অশুভের বিনাশ ঘটিয়ে পৃথিবীতে শুভ শক্তির কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন অসুরবিনাশী দেবী দুর্গা। সকাল থেকেই রাজধানীর পূজা মণ্ডপগুলোতে পূজা দিতে আসা সনাতন ধর্মালম্বীদের ভিড় চোখে পড়েছে।

রবিবার (২ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে মহাসপ্তমী পূজা দিতে দেখা গেছে।

গতকাল শুরু হয় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। পূজার প্রথম দিনেই মন্দির আর দেবী দর্শনে চলে আসে হিন্দু ধর্মালম্বীরা।

শাস্ত্রমতে, সপ্তমী পূজায় বিশেষ রীতি মেনে স্নান করানো হয় দেবী দুর্গাকে। পরে ধর্মীয় রীতিতে নতুন বস্ত্র ও নানা উপাচারে তার পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এদিন দেবীর তৃতীয় চক্ষুদান করা হয়। সপ্তমী পূজার শুরুতে নবপত্রিকা প্রবেশ ও প্রকৃতির বিভিন্ন সৃষ্টির মধ্যে ৯টি গাছের ফুল, ফল ও পাতা দিয়ে সব অশুদ্ধকে শোধনের মাধ্যমে শুদ্ধ করে দেবীকে পূজা করা হয়। কল্পনার মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গাকে মনের আসনে বসানোর পর অনুষ্ঠিত হয় সপ্তমী বিহিত পূজা।

মহাসপ্তমীর বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের প্রধান পুরোহিত ধর্মদাস চট্টোপাধ্যায় জাগো নিউজকে বলেন, এই দিনে দেবী দুর্গার সবচেয়ে ভয়ানক রূপ অর্থাৎ কালরাত্রি রূপের পূজা করা হয়। এর ফলে অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটিয়ে শুভ শক্তির কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন দেবী দুর্গা।

পঞ্জিকা অনুযায়ী, এবার দেবী মর্ত্যে আসছেন গজে (হাতিতে) চেপে। হাতিতে চড়ে দেবীর আগমনের অর্থ হলো শুভ। মনে করা হয়, দেবী যদি গজে চড়ে মর্ত্যে আসেন তাহলে তিনি সঙ্গে করে সুখ, সমৃদ্ধি নিয়ে আসেন। হাতি হচ্ছে জ্ঞান ও সমৃদ্ধির প্রতীক। আর ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে দেবী মর্ত্য ছাড়বেন নৌকায় চড়ে। নৌকায় চড়ে মর্ত্য ছাড়লে ভক্তের মনোবাসনা পূর্ণ হবে। পৃথিবী হয়ে ওঠে শস্য-শ্যামলা। কিন্তু সেই সঙ্গে অতি বর্ষণ বা প্লাবনের আশঙ্কাও থাকে।

পঞ্জিকা অনুযায়ী, আজ রোববার মহাসপ্তমী বিহিত পূজা, আগামীকাল সোমবার মহাষ্টমী বিহিত পূজা, পরশু মঙ্গলবার মহানবমী বিহিত পূজা এবং আগামী বুধবার দশমী বিহিত পূজা সমাপন ও প্রতিমা বিসর্জন হবে।

পূজা উদযাপন পরিষদের হিসাব অনুযায়ী, দেশে এবার ৩২ হাজার ১৬৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হচ্ছে। এ সংখ্যা গতবারের চেয়ে ৫০টি বেশি। ঢাকা মহানগরে এবার পূজা হচ্ছে ২৪১টি মণ্ডপে, যা গতবারের চেয়ে ৬টি বেশি।

(ওএস/এএস/অক্টোবর ০২, ২০২২)