আবু নাসের হুসাইন, সালথা : গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী কদমতলা বাজারের মেলা। মেঘলা আকাশ, থেমে থেমে বৃষ্টি। পথ-ঘাট কিছুটা ভেজা। তাতে কি, সেই প্রতিকুলতার মাঝেই নিশানা হিসেবে পোতা হয়েছে বাঁশের খুঁটি উপরে পলিথিনের কাগজ। লাল কাপড়ে ঘেরা চারিদিক। ভিতরে উঁকি মারছে হরেক রকমের গরম টাটকা মিষ্টি। চারপাশ ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ক্রেতারা। এছাড়াও ঝলমল করছে চুরি, ফিতা ও কানের দুলসহ নানান ধরনের মাটির খেলনা। এই দোকান ঘিরে দাড়িয়ে আছে নারী ও কিশোরীরা। সঙ্গে শিশু কিশোরের দল। শিশুদের মূখ থেকে ভেসে আসছে পুতপুত করে বাঁশির বাজনা।

মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চল কদমতলা বাজারে এ মেলার আয়োজন করা হয়। বিকাল থেকে শুরু হয় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যেবাহী এই মেলা।

এ মেলা উপলক্ষে দুপুর থেকেই কদমতলা বাজারে লোকজনের সমাগম ঘটতে থাকে। রাস্তার দুইপাশে ভ্রাম্যমাণ দোকানিরা বিভিন্ন দোকানপাট গড়ে তোলেন। সাথে স্থানীয় দোকানিরা তো রয়েছেনই।

এসব দোকানে রকমারি খেলনা, নারীদের ব্যবহার্য কসমেটিক, মিষ্টান্ন সামগ্রী, মুড়ি-খই, নানা ধরনের ভাজি-পোর, শরবতসহ হরেক রকম ফলমূল ও খাবার আইটেমের পসরা সাজিয়ে রাখেন দোকানিরা। ক্রেতারাও সাধ্য অনুযায়ী এসব পণ্য কিনে নিচ্ছেন।

স্থানীয় নারদ মালো, কৃষ্ণ মালো, আউয়াল শেখ, তমিজদ্দিনসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, প্রত্যেক বছরে শারদীয় দূর্গাপূজার নবমী দিনে ভাওয়াল কদমতলা বাজারে এই মেলা বসে। এবারও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। তবে আগে অনেক বড় পরিসরে এই মেলা বসতো। এখন মেলার ব্যাপ্ত ও জেল্লা অনেক কমেছে। এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অন্তত ৮-১০টি গ্রামের মানুষ মেলায় আসে কেনাকাটা করতে। প্রতিবছর মেলা উপলক্ষে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। তবে এবার বীর মুক্তিযোদ্ধা বাচ্চু মাতুব্বারের একটি নৌকা বাইচ দিতে দেখা যায়। এছাড়া অন্য কোন নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা হয়নি। বহু বছরের পুরানো এই ঐতিহ্যবাহী মেলায় ছিলো ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড়।

(এএনএইচ/এএস/অক্টোবর ০৫, ২০২২)