একে আজাদ, রাজবাড়ী : রাজবাড়ী জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। সবার পেশা ব্যবসা। আরও একটি বিষয়ে দারুণ মিল রয়েছে তাদের। তিনজনের স্ত্রীরই রয়েছে ১০ ভরি করে স্বর্ণালংকার। একজনের ব্যাংকে কোনো অ্যাকাউন্ট নেই, একজনের মাত্র ৭ হাজার টাকা আবার আরেকজনের এক লাখ টাকা ব্যাংকে রয়েছে। রাজবাড়ী জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী তিন প্রার্থীর আর্থিক এ অবস্থা ফুটে উঠেছে তাদের হলফনামায়।

জানা যায়, আগামী ১৭ অক্টোবর রাজবাড়ী জেলা পরিষদ নির্বাচন। চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি একেএম শফিকুল মোর্শেদ আরুজ, স্বতন্ত্র প্রার্থী পাংশা পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি দিপক কুমার কুনডু ও ইমামুজ্জামান চৌধুরী রিটো।

তিন প্রার্থীর হলফনামা সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী একেএম শফিকুল মোর্শেদ আরুজ এমএসএস পাস। তার নামে কোনো মামলা নেই। তার আয়ের উৎস ব্যবসা। বার্ষিক আয় ৬ লাখ টাকা। স্ত্রীর আয় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তার অস্থাবর সম্পদ নগদ ৬ লাখ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৭ হাজার টাকা। পোস্টাল সেভিংস রয়েছে ৫ লাখ টাকা। রয়েছে ১০ লাখ ২৫ হাজার টাকা দামের একটি মোটর গাড়ি। ইলেকট্রনিকস সামগ্রীর মধ্যে আছে টিভি, ফ্রিজ, ফ্যান। স্ত্রীর নামে কোনো টাকা নেই। আছে ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার। স্থাবর সম্পদ রয়েছে পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত কৃষিজমি চার বিঘা, অকৃষি জমি ২০ শতাংশ। স্ত্রীর নামে রয়েছে ২২ শতাংশ কৃষি ও শূন্য ৩ শতাংশ অকৃষি জমি। ন্যাশনাল ব্যাংক, পাংশা শাখায় তার নামে ঋণ আছে ২০ লাখ টাকা। তার সম্ভাব্য নির্বাচনী ব্যয় ৫ লাখ টাকা, যা তিনি নিজস্ব তহবিল থেকেই খরচ করবেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী পাংশা পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি দিপক কুমার কুন্ডু তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাস। তার নামে একটি মামলা আদালতে বিচারাধীন। তার আয়ের উৎস ব্যবসা। বার্ষিক আয় সাড়ে ৩ লাখ টাকা।নির্ভরশীলদের কোনো আয় নেই। অস্থাবর সম্পদ হিসেবে রয়েছে নগদ ২ লাখ এবং ব্যাংকে ১ লাখ টাকা। এ ছাড়া স্ত্রীর ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার। ইলেকট্রনিকস ও আসবাবের মধ্যে আছে ফ্রিজ, টিভি, সোফা, খাট প্রভৃতি। স্থাবর সম্পদ রয়েছে ৭ শতাংশ জায়গার ওপর একটি বাড়ি। স্ত্রীর নামে কোনো স্থাবর সম্পদ নেই। তার নির্বাচনী ব্যয় ৫ লাখ টাকা। যার ২ লাখ টাকা তিনি নিজে বহন করবেন। বাকি ৩ লাখ টাকা মামাতো ভাই সাধন কুমার দের কাছ থেকে ধার করবেন।

অপর স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ইমামুজ্জামান চৌধুরী রিটোর শিক্ষাগত যোগ্যতা আমেরিকার স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক থেকে দ্য ডিগ্রি অব অ্যাসোসিয়েটস অব আর্টস। তিনি পেশায় মৎস্য খামারি। আয়ের উৎস বাড়ি, দোকান ভাড়া থেকে বার্ষিক ৭২ হাজার টাকা এবং ব্যবসা থেকে বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদ হিসেবে নগদ টাকা ও ব্যাংকে জমার পরিমাণের ঘরে ‘প্রযোজ্য নহে’ উল্লেখ আছে। স্ত্রীর রয়েছে ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার। স্থাবর সম্পদ অকৃষি জমি ৯ শতাংশ এবং একতলা দালান। স্ত্রীর সম্পদ না থাকলেও ১০ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১০০ শতাংশ অকৃষি জমির মালিকানায় তার ২ শতাংশ। সম্ভব্য নির্বাচনী ব্যয় ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

রাজবাড়ী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান বলেন, নির্বাচনে ৩ জন চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য পদে ১৮ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৮ জন। এর মধ্যে সংরক্ষিত ২ নং ওয়ার্ডে সফুরা বেগম বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

(একে/এসপি/অক্টোবর ০৬, ২০২২)