উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : লালনের গান নিয়ে সারা বাংলাকে যিনি মাতিয়ে রেখেছেন তিনি হচ্ছেন লালন কন্যা ফরিদা পারভিন। লালন অথবা সাইজিকে ধারন করে কয়েক দশক ধরে তিনি লালন সঙ্গীতকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। লালন সঙ্গীত নিয়ে তিনি কি ভাবছেন অথবা ভবিষ্যতে কি করতে চাচ্ছেন, এই নিয়ে কথা বলছেন ফরিদা পারভিন। সাক্ষাত্কারটি নিয়েছেন মিতা

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ : কেমন আছেন?

ফরিদা পারভিন: এই তো ভালো।

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ: লালনকে আপনি আপনার মধ্যে সবসময় ধারন করেন বলেই জানি আমরা। এই লালনসঙ্গীতকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আপনি কি কিছু ভাবেছেন? অথবা এই বিষয়টি নিয়ে কোনো কাজ করছেন?

ফরিদা পারভিন: নতুন প্রজন্ম লালনসঙ্গীত করার সময় এর অনেকটাই বিকৃত রূপ করে ফেলে। লালনের গানের বিকৃত রূপ যাতে না হয় এবং এর সঠিক ধাচ ধরে রাখার জন্য আমি ১০০টি স্বরলিপি করার উদ্দ্যোগ নিয়েছি। এর মধ্যে প্রায় অনেকগুলোর স্বরলিপি করার কাজই শেষের দিকে। হয়তোবা নতুন প্রজন্মের মধ্যে এই স্বরলিপি গুলো দিয়ে লালনের সঠিক ধাচ পৌচ্ছে যাবে।

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ: স্বরলিপি ছাড়া নতুন প্রজন্মের কাছে লালনের গান পৌঁছে দেওয়ার জন্য আর অন্য কোনো পদ্ধতি?

ফরিদা পারভিন : ঢাকার তেজগাঁতে আমার একটি গানের স্কুল আছে। নাম অচিন পাখি। আমার চেষ্টা অচিন পাখির মাধ্যমে করা হয় লালনের গানের সঠিক ধাচ ধারন করে গান সেখানো।

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ: নতুন প্রজন্মকে নিয়ে কিছু বলেন?

ফরিদা পারভিন: নতুন প্রজন্মটা একটু কেমন যেন। তারা সাধনা করে না কোনো জিনিস নিয়ে। তারা যেন খানিকটা বাহবা নিয়েই খুশী। কিন্তু সঙ্গীতটা যে খানিকটা বাহবা নয় এটাই তারা বুঝতে চায় না। আর তাদের এই বাহবাকে আরোও সোনায় সোহাগা করে তুলছে বর্তমান যুগের কিছু সংখ্যক টেলিভিশন চ্যানেল। পরিশেষে এই খানিকের বাহবায় খুশী হওয়া নতুন প্রজন্মকে নিয়ে একটি কথাই বলবো এরা আসলে শিল্পী নয়। কিছু যন্ত্রের বলে এরা কেবলমাত্র গায়ক কিংবা গাইকাই হয়ে উঠতে পেরেছে।

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ: সঙ্গীত নিয়ে কিছু বলুন?

ফরিদা পারভিন: সঙ্গীত নিয়ে বলারতো আর শেষ নেই। তবে এইটুকু বলবো সঙ্গীতটা অনেক বেশী অভিমানী। যদি আপনি তার চর্চা না করেন তবে র্নিদিধায় সে আপনার কাছ থেকে সরে যাবে। সত্যি বলতে সঙ্গীতের জন্য ডেডিকেশন দরকার। এটা অনেক কঠিন একটা জিনিস। এখানে সাত স্বর মিলানো হয়। তাছাড়া এটা একটা গুরু মুখী বিদ্যা। যে সাধনা করবে, গুরুর চরন ধরে থাকবে সে টিকে থাকবে। আর যে থাকবে না সে ঝরে পড়বে। এটাই স্বাভাবিক।

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ: পরিশেষে আপনার নিজের সর্ম্পকে কিছু জানতে চাইবো।

ফরিদা পারভিন: নিজের সর্ম্পকে আসলে তেমন কিছু বলার নেই। আমি একজন মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান। বাবা সরকারি চিকিৎসক ছিলেন। ছোট বেলায় মায়ের কাছ থেকে শুনতে শুনতে গানের প্রতি ভালোবাসা জন্মানো। আর লালন সঙ্গীত গাওয়া হয়েছিল গুরুরি প্রতি জিদ করে। এই সব মিলিয়েই আজকের এই আমি, আজকের লালন কন্যা, আজকের ফরিদা পারভিন।

(এম/অ/অক্টোবর ১৩, ২০১৪)