সাজিরুল ইসলাম সঞ্চয়, সিরাজগঞ্জ : হাইকোর্টের রায় ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের আদেশ অমান্য করে আঞ্চলিক মহাসড়ক ও অভ্যান্তরিন সড়কে যানবাহনে টোল আদায় অব্যাহত রেখেছে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌরসভা। সড়কে দাড় করিয়ে প্রতিনিয়ত সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা ও রিক্সা থেকে ৫ ও ১০ টাকা হারে টোল আদায় করা হচ্ছে। স্থানীয় সরকারের নির্দেশনা অবমাননা করে পৌরসভার টোল আদায় অব্যাহত রাখায় ক্ষোভ জানিয়েছেন যানবাহন চালকসহ বিশিষ্ঠজনেরা।

সরেজমিন সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌর এলাকার মুকুন্দগাতিতে দেখা যায়, সিরাজগঞ্জ-এনায়েতপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের এই স্থানটিতে সিএনজি অটোরিক্সা দাড় করিয়ে পৌরসভার রশিদ দিয়ে টোল আদায় করা হচ্ছে। এই মহাসড়কে চলাচলকারি প্রতিটি সিএনজিচালিত অটোরিক্সা থেকে টোল নেয়া হচ্ছে ১০ টাকা। টোল আদায়ের রশিদে বেলকুচি পৌরসভা ও টোল আদায়কারি হিসেবে মো: মনিরুল ইসলামের নাম লেখা রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেলকুচি পৌরসভার কাউন্সিলর আব্দুল মুন্নাফ তার নিকটাত্বীয় মো: মনিরুল ইসলামের নামে টোল আদায় করছে। একইভাবে মুকুন্দগাতি মোড়ে বেলকুচি পৌরসভার নামে সকল ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা ও রিক্সা-ভ্যান থেকেও আদায় করা হচ্ছে টোল। এই স্থানে প্রতিটি ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা থেকে ১০ টাকা ও রিক্সা-ভ্যান থেকে টোল নেয়া হচ্ছে ৫ টাকা করে।

অথচ গত ২৫’ই সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের স্থানীয় সরকারের পৌর ১-শাখা থেকে দেশের সকল পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বরাবর পাঠানো এক পত্রে টার্মিনাল ব্যাতিত সড়ক, মহাসড়ক থেকে সকল প্রকার যানবাহনের টোল আদায় বন্ধ রাখতে নির্দেশনা জারি করা হয়। হাইকোর্ট বিভাগে দায়েরকৃত এক রিট পিটিশনের রায়ের আলোকে এই নির্দেশনাটি জারি করা হয়। হাইকোর্টের রায় ও মন্ত্রনালয়ের আদেশ অবমাননা করে বেলকুচি পৌরসভার টোল আদায়ে ক্ষোভ ও বিস্ময় প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে বেলকুচি পৌরমেয়র সাজ্জাদুল হক রেজার সাথে কথা বলা সম্ভব না হলেও বেলকুচি পৌরসভার পৌর প্রধান নির্বাহীর অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা হিসাবরক্ষন কর্মকর্তা মো: ওয়ারেছ আলী জানান, পৌরসভার কর্মকর্তা, কর্মচারিদের বেতনভাতাসহ সকল ব্যায় মেটাতে হয় পৌরসভার নিজস্ব আয়ে। আর এই আয়ের মূল উৎস টোল ও ট্যাক্স আদায়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় টোল আদায় বন্ধের বিষয়ে একটি নির্দেশনা দিয়েছে বলে শুনেছি, লিখিত কোন আদেশ বা নির্দেশনা পাইনি। লিখিত নির্দেশনা পেলে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

(এস/এসপি/অক্টোবর ১০, ২০২২)