মিলাদ হোসেন অপু, ভৈরব : দেশের বহুল আলোচিত বিশ্বজিৎ দাস হত্যাকাণ্ডের যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মোশারফ হোসেনকে গ্রেফতার করেছে ভৈরব থানা পুলিশ। গতকাল রবিবার রাত সাড়ে আটটায় ভৈরব থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে ঢাকার বাড্ডা এলাকার থেকে তাকে গ্রেফতার করে।

মোশারফ হোসেন ভৈরব উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের শ্রীনগর গ্রামের মাহতাব মিয়ার ছেলে। সে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিল। সে ঢাকার একটি প্রাইভেট কোম্পানি এসজিএস বাংলাদেশ লিমিটেডে কর্মরত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর পথচারী বিশ্বজিৎ দাসকে বাহাদুর শাহ পার্কের (ভিক্টোরিয়া পার্ক) সামনে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রলীগের ক্যাডাররা। শাঁখারীবাজারে দর্জির দোকান ছিল বিশ্বজিতের। তার গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর রাজধানীর লক্ষ্মীবাজারে থাকতেন তিনি।

আলোচিত বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ রায় দেন। বিচারিক আদালতের রায়ে ২১ আসামির মধ্যে আটজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। তখন এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামিরা। নিম্ন আদালতের আদেশে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রফিকুল ইসলাম শাকিল, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, এমদাদুল হক এমদাদ, জিএম রাশেদুজ্জামান শাওন, সাইফুল ইসলাম, কাইয়ুম মিঞা টিপু, রাজন তালুকদার ও মীর মো. নূরে আলম লিমন।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, এএইচএম কিবরিয়া, খন্দকার ইউনুস আলী, তারিক বিন জোহর তমাল, গোলাম মোস্তফা, আলাউদ্দিন, ওবায়দুল কাদের তাহসিন, ইমরান হোসেন, আজিজুর রহমান, আল-আমিন শেখ, রফিকুল ইসলাম, মনিরুল হক পাভেল, মোশাররফ হোসেন ও কামরুল হাসান। তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়। পরে রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ৬ আগস্ট নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আট আসামির মধ্যে দুজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল, চারজনের মৃত্যুদণ্ড পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন এবং অন্য দুজনকে খালাস দেন হাইকোর্ট। এছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া ১৩ আসামির মধ্যে যে দুজন আপিল করেন, তারা খালাস পেয়েছিলেন।
হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাঁপ্রাপ্ত বাকি ১১ আসামির সবাই পলাতক। তাদের মধ্য ভৈরবের মোশারফ হোসেন দীর্ঘ দশ বছর পলাতক ছিলেন।

এ বিষয়ে ভৈরব থানার এসআই সাইদুর ইসলাম বলেন, বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার যাবজ্জীবন পলাতক আসামি মোশারফ হোসেন দীর্ঘ দশ বছর যাবত পলাতক ছিলেন। তিনি ঢাকার একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে কর্রমত ছিলেন। রবিবার রাতে ভৈরব থানা পুলিশের একটি বিশেষ টিম ঢাকার বাড্ডা এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

(এম/এসপি/অক্টোবর ১৭, ২০২২)