শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরের নকলায় পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের কৃষকদের মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) উদ্ভাবিত গ্রীষ্মকালীণ বাদাম চাষ এক নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি করেছে।

আলু ও ভূট্টা চাষের মধ্যবর্তী সময়ে পতিত পড়ে থাকা চরাঞ্চলের এসব জমিতে বারি চীনা বাদাম-৮ চাষ করে বিঘা প্রতি মাত্র তিন চার হাজার টাকা খরচ করে কৃষকরা ৩৫/৪০ হাজার টাকা আয় করতে পারছেন। এটাকে কৃষকরা ‘ফাও ফসল’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

নকলা উপজেলার দক্ষিণ নারায়নখোলা গ্রামে মঙ্গলবার বারি চীনা বাদাম-৮ চাষের একটি প্রদর্শনী মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়। চীনা বাদামের জাত উন্নয়ন, বীজ উৎপাদন এবং শস্য সংগ্রহোত্তর প্রযুক্তি উদ্ভাবন কর্মসূচীর আওতায় জামালপুর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র এ মাঠ দিবসের আয়োজন করে।

এসময় প্রদর্শনী প্লটের পাশে অনুষ্ঠিত এক কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামালপুর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শাহাদত হোসেন। স্থানীয় ইউপি মেম্বার গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে কৃষক সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নারায়ন চন্দ্র বসাক, জাতটির উদ্ভাবক ড. মঞ্জুরুল কাদির, প্রদর্শনী চাষী দেলায়ার হোসেন প্রমুখ। সমাবেশে এলাকার ৬০ জন বাদাম চাষী উপস্থিত ছিলেন।

ওই প্রদর্শনী প্লটের ৭৫ শতাংশ জমিতে আবাদ করা বারি চীনা বাদাম-৮ শস্য উত্তোলন করে শুকনা অবস্থায় বাদামের বিঘাপ্রতি ফলন পাওয়া যায় ১৫ মণ । যা দেশী জাতের বাদামের তুলনায় প্রায় ৩/৪ গুন বেশী। বারি-৮ জাতের এমন ফলন দেখে উপস্থিত কৃষক কৃষি বিশেষজ্ঞরা দারুন উচ্ছসিত হন।

জাতটির উদ্ভাবক এবং জামালপুর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মঞ্জুরুল কাদির বলেন, গ্রীষ্মকালীণ আবাদ করা বারি চীনাবাদাম-৮ কৃষকরা বীজ হিসেবে সংরক্ষণ করে অধিক লাভবান হতে পারেন। তাছাড়া এ বাদামের পুষ্টিমান বেশী হওয়ায় বাজারে এর চাহিদাও বেশী। ফলনও হয় স্থানীয় জাতের চাইতে কয়েকগুন বেশি। তিস্তার চরাঞ্চলের কৃষকরা বারি চীনা বাদাম-৮ চাষ করে আর্থিকভাবে অনেক লাভবান হচ্ছেন। শেরপুরের ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চলেও এ জাতের বাদামের চাষ সম্প্রসারণ করা গেলে এখানকার চরাঞ্চলের চিত্রও পাল্টে যাবে। কৃষকরাও তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হবেন।

(এইচবি/জেএ/অক্টোবর ১৪, ২০১৪)