শিতাংশু গুহ


ঢাকা পোষ্টের সৌজন্যে ২০২৩ সালের সরকারি ছুটির তালিকা পেলাম। মোট সাধারণ ছুটি ১৪ দিন্, ঐচ্ছিক ছুটি আছে ৮ দিন্। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রের উদৃতি দিয়ে প্রকাশিত এ তালিকায় ১৪ই এপ্রিল শুক্রবার হওয়ায় সম্ভবত: এবারের পহেলা বৈশাখ ছুটি ঐচ্ছিক তালিকায় চলে গেছে। ৮ টি ঐচ্ছিক ছুটির বাকি ৭টি ইসলাম ধর্মীয় ছুটি; শবে বরাত, শবে কদর, আশুরা, দুই ঈদের আগের ও পরের ২ দিন করে ৪ দিন। 

সাধারণ ছুটির ১৪ দিনের মধ্যে মুসলমানদের ৪টি, দুই ঈদ, জুমাতুল বিদা ও ঈদে মিলাদুন্নবী। হিন্দুদের ২টি, জন্মাষ্টমী ও দুর্গাপূজার বিজয়া দশমী। বৌদ্ধ ও খৃষ্টানদের ১টি করে বুদ্ধপূর্ণিমা ও বড়দিন। বাকি ৬টি ছুটি ধর্মনিরপেক্ষ, শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, স্বাধীনতা দিবস, মে দিবস, জাতীয় শোক দিবস এবং বিজয় দিবস। সাধারণ ও ঐচ্ছিক ছুটি মিলিয়ে মোট ২২ দিন ছুটির মধ্যে ৫০% বা মোট ১১ দিন ইসলামিক ছুটি। ২ দিন হিন্দুদের ছুটি। ১ দিন করে বৌদ্ধ ও খৃষ্টানদের ছুটি। এবং ৭ দিন ধর্মনিরপেক্ষ ছুটি। দুর্গাপূজায় ছুটি বাড়ানোর দাবি অনেকদিন পুরানো, বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার।

আমি যে পাসপোর্ট নিয়ে আমেরিকা আসি, সেটি ফেব্রুয়ারী ১৯৮৯-এর, বেশ বড়, এখনো আছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হলে ঢাকা ভার্সিটি’র ছাত্রাবস্থায় পাসপোর্ট করি, তখন সেটি একটি গর্বের বিষয় ছিলো। ২০০৭ সালে নিউইয়র্ক থেকে নুতন, অপেক্ষাকৃত ছোট পাসপোর্ট নেই, সেটিও আছে। দু’টি পাসপোর্ট উল্টেপাল্টে দেখলাম, ভেতরের পাতায় বৃত্তাকারে লাল মানচিত্র এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ব্যাতিত আর কোন ছবি নেই। বাংলাদেশে এখন ই-পাসপোর্ট। এতে বিভিন্ন পাতায় বিবিধ ছবি আছে, ৩৬/৩৭ পাতায় মডেল মসজিদের ছবি। এরআগে ছিলো মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি), এর ২য় এডিশনে ১২/১৩ পাতায় কান্তজী মন্দিরের ছবি ছিলো। বর্তমানে চালু ই-পাসপোর্টে সেটি নেই? প্যাগোডা বা চার্চের কোন ছবিও নেই? বাংলাদেশে একদা শুধু ভারত ভ্রমণের জন্যে একটি খয়েরি পাসপোর্ট ছিলো, ছিলো হাতে লেখা শাপলা ফুল যুক্ত পাসপোর্ট। সেগুলো এখন ইতিহাস, এমআরপি’ও অচল, আছে শুধু ই-পাসপোর্ট, যা বেশ উন্নত, এটি বাঙ্গালী সংস্কৃতি’র পরিচয় দিচ্ছে কিনা সেই প্রশ্ন থেকেই গেলো।

লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।