নওগাঁ প্রতিনিধি : রবিবার রাতে নওগাঁ সদর, ধামইরহাট, পত্মীতলা ও বদলগাছী উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড়, বজ্রসহ শিলাবৃষ্টি, বিদ্যূতস্পৃষ্ট ও গাছের ডাল পড়ে শিশুসহ চারজন নিহত হয়েছে।

রবিবার দিবাগত রাতে ও সোমবার সকালে এই মর্মান্তিক ঘটনাগুরো ঘটে। নিহতরা হলেন, নওগাঁ শহরের চকবিরাম মহল্লার আবু ইসা (২৫), পত্নীতলা উপজেলার শীতল গ্রামের মাহমুদুল হক (২৮), নওগাঁ সদর উপজেলার রজাকপুর গ্রামের আব্দুর রহমান (৩০) ও বদলগাছী উপজেলার সোয়াশা গ্রামের পিয়াস (৩) নামে এক শিশু।

জানা গেছে, রবিবার দিনগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে নওগাঁ জেলার ওপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় শহরের বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন চকবিরাম এলাকায় ঘরের ছাউনি উড়ে আহত হন আবু ইসা। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। ধামইরহাট উপজেলার আগ্রাদ্বিগুন ইউনিয়নের গঙ্গা-যমুনা গ্রামের মাঠে বোরো ধানে পানি সেচ দেয়ার শ্যালো মেশিন পাহারা দিতে যায় ভগ্নিপতি শাহাজাহান আলী (৩০) ও শ্যালক মাহমুদুল হক (২৮)। পাহারারত অবস্থায় হটাৎ ওই স্থানে বজ্রপাত ঘটলে ঘটনাস্থলে মাহমুদুল হক মারা যায়। আহত অবস্থায় শাহাজাহান আলীকে উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মৃত মাহমুদুল হক জেলার পতœীতলা উপজেলার শিতল শুকানকুড়ি গ্রামের হাইমুদ্দিনের পুত্র।

একই সময় বদলগাছী উপজেলার সোয়াশা গ্রামের পিয়াস নামে এক শিশু গাছের ডাল পড়ে মারা গেছে। এদিকে সোমবার সকালে ঘরের বৈদ্যুতিক সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে অসাবধানতাবশত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আব্দুর রহমান ঘটনাস্থলেই মারা যান। ঝড়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘরের চালা উড়ে গেছে। গাছপালা ভেঙ্গে পড়েছে। বিদ্যুতের তার ছিড়ে গেছে। উঠতি বোরো ধান, ভুট্টাসহ মৌসুমি ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে একটানা খরার কারণে জেলার সর্বত্র পানির জন্য যখন হাহাকার চলছে, ঠিক তখনি এ বৃষ্টিপাত এলাকার জন্য আর্শীবাদ হিসেবে এসেছে। কিছুটা হলেও ফিরে এনেছে স্বস্তি। তবে বৃষ্টির সঙ্গে প্রবল ঝড় বয়ে যাওয়ার কিছু এলাকায় বোরো ধান ও ভুট্রা গাছ মাটিতে শুয়ে পড়ে। ধামইরহাট উপজেলার জগৎনগর গ্রামের কৃষক মিলন জানান, তিনি প্রায় ৩ একর জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। প্রবল ঝড়ে তার প্রায় ৬০ শতাংশ জমির ভুট্টা গাছ মাটিতে শুয়ে পড়েছে। এতে প্রায় ৩০-৩৫ হাজার টাকার ক্ষতির আশংকা করছেন তিনি।

এব্যাপারে ওই উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ড. মো. জামাল উদ্দিন জানান, এদিন এলাকায় প্রায় ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। অনেক দিন পর বৃষ্টি হওয়ায় ফসলের জন্য বেশ উপকার হয়েছে। তিনি আরও বলেন, যেসব জমির ধান ও ভুট্টা গাছ শুয়ে পড়েছে, সেগুলোর তেমন ক্ষতি হবে না।

(বিএম/এলএম/এপ্রিল ২৮,২০১৪)