ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহের শৈলকূপায় সাব-রেজিস্ট্রার ও দলিল লেখকদের দ্বন্দ্বে নানা বিড়ম্বনায় পড়ছেন সেবাগ্রহীতরা। গত চারদিন ধরে দলিল লেখকদের কর্মবিরতির কারণে শৈলকূপা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। অনিয়মের অভিযোগ এনে সাব-রেজিস্ট্রার ইয়াসমিন শিকদারের অপসারণের দাবিতে গত রবিবার থেকে কলম বিরতি অব্যাহত রেখেছেন দলিল লেখকরা। এ কারণে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে। এ অচলাবস্থা নিরসনে জেলা রেজিস্ট্রার দলিল লেখকদের নিয়ে সমঝোতা বৈঠক ডাকলেও তাতে কিছুই হয়নি। এ পরিস্থিতির জন্য উভয় পক্ষই একে অপরকে দায়ী করছেন।

সরেজমিন শৈলকূপা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে দেখা যায় দলিল লেখকরা কেউ কাজে নেই। কিছু লোক দলিল করার জন্য সেখানে গিয়ে বিফল হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। সাব-রেজিস্ট্রার অফিস চত্ত্বরে দাড়িয়ে থাকা স্থানীয় এক ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, গত ৪ দিন ধরে একটি দলিল করার জন্য ঘুরছেন অথচ তার জরুরি দলিলটি করতে পারছেন না। জমি রেজিস্ট্রি করতে আসা নোয়াব আলী জানান,সাব-রেজিস্ট্রার ও দলিল লেখকদের দ্বন্দ্বের কারণে আজকেও আমি জমি রেজিস্ট্রি করতে পারলাম না।

স্থানীয়রা জানান, সেবাগ্রহীতাদের জিম্মি করে দাবি আদায়ের আন্দোলন কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তারা নিজেদের সমস্যা আলাপ আলোচনা করে সমাধান করতে পারেন। কিন্তু দলিল সম্পাদন বন্ধ করা কিছুতেই ঠিক হচ্ছে না।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, জানা গেছে,গত ২২ নভেম্বর একটা কমিশনের দলিল রেজিস্ট্রি করার জন্য সাব-রেজিস্ট্রার ইয়াসমিন শিকদারের কাছে যান দলিল লেখক সমিতির সাধারন সম্পাদক আক্তারুজ্জামান মনির। সেসময় মনির অবৈধভাবে জমি রেজিস্ট্রির জন্য সাব-রেজিস্টারকে চাপ প্রয়োগ করেন। তাতে রাজি হননি সাব-রেজিস্ট্রার। পরের দিন এজলাসে গিয়ে সাব-রেজিস্ট্রার ইয়াসমিনকে লাঞ্ছিত ও হুমকি-ধমকি প্রদান করেন দলিল লেখক মনির। এঘটনায় জেলা রেজিস্ট্রার মোঃ আসাদুজ্জামান মৌখিকভাবে দলিল লেখক মনিরকে বহিস্কার করেন।

শৈলকূপা দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান মনির জানান, দলিল রেজিষ্ট্রির সময় নানা অজুহাতে সাব-রেজিষ্ট্রার ইয়াসমিন শিকদার অর্থ হাতিয়ে নেন এবং যথা সময়ে অফিসে আসেন না তিনি। আমরা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

শৈলকূপা সাব-রেজিস্ট্রার ইয়াসমিন শিকদার জানান, কিছু দলিল লেখকরা আমার বিরুদ্ধে মনগড়া অভিযোগ তুলছেন। আমি সরকারি নিয়মের বাহিরে কোন দলিল রেজিস্ট্রি করি না।

শৈলকূপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) বনি আমিন জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। সমাধানের জন্য আলোচনা চলছে। তবে কেউ যদি লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(একে/এসপি/নভেম্বর ৩০, ২০২২)