ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহে পরকীয়া প্রেমিকাকে নিজের কর্মরত প্রতিষ্ঠানে অফিস সহায়ক পদে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ সদর উপজেলার হরিশংকরপুর জেসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহায়ককে দ্রুত অপসারণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী। 

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার হরিশংকরপুর জেসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু আহমেদ বিশ্বাসের সঙ্গে শৈলকূপার রুপদহ এলাকার তার চাচাতো ভাই সিঙ্গাপুর প্রবাসী শের আলী বিশ্বাসের স্ত্রী অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলে। একটা সময় তাদের সম্পর্ক মধুর পর্যায়ে গড়ায়। সেই সুবাদে শের আলী বিশ্বাসকে তালাক দেয় তার স্ত্রী অন্তরা খাতুন জনি। তারপর থেকে ঝিনাইদহ শহরের বিভিন্ন স্থানে ভাড়া বাসায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস শুরু করে প্রধান শিক্ষক আবু আহমেদ বিশ্বাস ও অন্তরা খাতুন জনি। এক পর্যায়ে উর্ধ্বতন কর্তাব্যক্তিদের ম্যানেজ করে নিজের কর্মরত প্রতিষ্ঠান হরিশংকরপুর জেসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক পদে অন্তরা খাতুন জনিকে চাকরি দেন আবু আহমেদ বিশ্বাস।

এদিকে তাদের পরকীয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাননি ভুক্তভোগী দুই পরিবারের সদস্যরা। আবু আহমেদ বিশ্বাসের চার কন্যা ও অন্তরা খাতুন জনির দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। তারা হতাশা ও নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থীর অভিভাবকেরা জানান, আবু আহমেদ বিশ্বাস হরিশংকরপুর জেসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করার পর থেকে স্থানীয় একটা প্রভাবশালী মহলের সাথে যোগসাজশ করে জাল-জালিয়াতি, সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতি করে যাচ্ছে। সর্বশেষ তার পরকীয়া প্রেমিকাকে খুশি করতে এই প্রতিষ্ঠান চাকরি দিয়েছেন। এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় নানা ধরনের আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এতে করে শিক্ষার্থীরা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ছে। এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। তাই আমরা অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবু আহমেদ বিশ্বাস ও অফিস সহায়ক অন্তরা খাতুন জনির দ্রুত অপসারণের দাবি জানাচ্ছি।

উল্লেখ্য, প্রধান শিক্ষক আবু আহমেদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে নিয়োগ জালিয়াতি, বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ, নিজের পরকীয়া প্রেমিকাকে অফিস সহায়ক পদে চাকরি দেওয়াসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি এ ঘটনা নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে গুরুত্ব সহকারে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবু আহমেদ বিশ্বাস ও অফিস সহায়ক অন্তরা খাতুন জনিকে অপসারণ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মনিরুল ইসলাম জানান, আমি অভিযুক্ত শিক্ষককে আমার কার্যালয়ে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। এক পর্যায়ে ধর্মগ্রন্থ ছুঁয়ে তিনি এ ঘটনা অস্বীকার করেন। আমি এ বিষয়ে আর কিছু বলতে পারবো না।

(একে/এসপি/ডিসেম্বর ০৪, ২০২২)