আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মধ্য আফ্রিকার দেশ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে (ডিআর কঙ্গো) ২৭২ জন বেসামরিক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। গত সপ্তাহে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় কিশিশে শহরে এ হত্যাকাণ্ড চালায় স্থানীয় একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী।

অবশ্য এর আগে দেশটির সরকার জানিয়েছিল, কিশিশে শহরে বিদ্রোহীদের হামলায় নিহত বেসামরিক মানুষের সংখ্যা ৫০। কিন্তু পরবর্তী সময়ে হত্যাকাণ্ডের হালনাগাদ তথ্যে সে সংখ্যা ২৭০ জনেরও বেশিতে দাঁড়িয়েছে।

সোমবার (৫ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য জানায় কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ডিআর কঙ্গোর শিল্পমন্ত্রী জুলিয়েন পালুকু বিদ্রোহীদের হামলায় নিহত বেসামরিক মানুষের নতুন সংখ্যা ঘোষণা করেন। এসময় তার সঙ্গে দেশটির সরকারের মুখপাত্র প্যাট্রিক মুয়ায়াও উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় প্যাট্রিক মুয়ায়া বলেন, আমি এ মুহূর্তে হামলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে পারছি না। অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করছি।

তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যা জানতে পেরেছি তা হলো, একটি অ্যাডভেন্টিস্ট চার্চ ও হাসপাতালে হামলা চালানো হয়েছে। নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকটি শিশুও রয়েছে।

আল জাজিরা বলছে, বেসামরিক হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনায় এম-২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও তাদের সহযোগীরা জড়িত বলে দাবি করছে কঙ্গো সরকার। তবে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি সরকারের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এমনকি, বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালানোর অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেও দাবি করেছে এম-২৩।

গত সপ্তাহে জাতিসংঘসহ বলেছিল, আমাদের কাছে গত মঙ্গলবার কঙ্গোর উত্তর কিভু প্রদেশের কিশিশে শহরে বেসামরিক হত্যাকাণ্ডের তথ্য রয়েছে। একই দাবি করেন মার্কিন এক কূটনীতিক। তবে সেসময় কোনো পক্ষই বিস্তারিত কিছু জানায় না। তবে তারা বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

জাতিসংঘ জানায়, তারা গত ২৯ নভেম্বর কিশিশে অঞ্চলে এম- ২৩ ও স্থানীয় মিলিশিয়াদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় ব্যাপক বেসামরিক হতাহতের তথ্য পেয়েছে। তবে, কী পরিমাণ মানুষ মারা গেছে, তা স্পষ্ট করে বলেনি সংস্থাটি।

ডিআর কঙ্গোতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন গত সপ্তাহে নৃশংসতার প্রতিবেদনের নিন্দা করে বলেছে, বেসামরিক হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনা সত্যি হলে, তা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন আইনের আওতায় পড়তে পারে।

জাতিসংঘ মিশন একটি টুইটারে লেখে, আমরা এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি ও অবিলম্বে তদন্ত করে অপরাধীদের বিচার নিশ্চিতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাচ্ছি।

কঙ্গোর সেনাবাহিনী ও জাতিগত টুটসি গোষ্ঠীর নেতৃত্বাধীন মিলিশিয়া বাহিনী এম-২৩ মধ্য আফ্রিকার এ দেশটির পূর্বাঞ্চলে কয়েক মাস ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। এতে পুরো ওই এলাকা অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে।

গত সেপ্টেম্বরে এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা জানিয়েছিল, এম- ২৩ বিদ্রোহীরা বছরের পর বছর নিষ্ক্রিয় থাকার পর, ২০২১ সালের শেষের দিকে আবারও সক্রিয় হয়ে ওঠে। তখন থেকেই তারা উগান্ডা সীমান্তের কৌশলগত শহর বুনাগানাসহ উত্তর কিভুজুড়ে বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে নেয়।

তথ্যসূত্র : আল জাজিরা

(ওএস/এএস/ডিসেম্বর ০৬, ২০২২)