মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে প্রবাসীদের ভূমিকা অপরিসীম। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশী প্রবাসীরা তাদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশে প্রেরণ করে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে শক্তিশালী করে চলেছেন। বর্তমানে বিশ্বের ১৭৩ টি দেশের ১ কোটি ৩০ লক্ষেরও অধিক বাংলদেশী কর্মী বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত আছেন। তারা বছরে গড়ে প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স দেশে প্রেরণ করে থাকেন, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বৈদেশিক কর্মসংস্থান এক দিকে দেশের বেকারত্ব হ্রাস করে, অন্যদিকে প্রবাসীদের প্রেরিত মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা দেশের আমদানী ব্যয় মেটানো, দারিদ্র্য বিমোচনসহ দেশের অর্থনৈতিক চাকাকে সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে গড়ে প্রায় ১০ লক্ষ লোকের বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়ে থাকে।

এদিকে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত মৌলভীবাজার জেলার ১ হাজার ১০ জন প্রবাসীকে বৈধভাবে দেশে রেমিটেন্স পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হচ্ছে বলে গতকাল সোমবার প্রেসকনফারেন্সের মাধ্যমে জানিয়েছেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান।

তিনি বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে তাদের কাছে অনুরোধপত্র পাঠানো হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সব প্রবাসীর কাছেই এ ধরণের চিঠি ধারাবাহিকভাবে যাবে। এসব চিঠি চলতি ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জানুয়ারী মাস পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে সব প্রবাসীর কাছে পাঠানোর টার্গেট রয়েছে বলেও জানান তিনি।

গত সোমবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের সন্মেলন কক্ষে জেলার প্রবাসীদের বৈধভাবে রেমিটেন্স প্রেরণে উদ্বুদ্ধকরণ সংক্রান্ত সভায় এ তথ্য জানান জেলা প্রশাসক। তবে মঙ্গলবার দুপুরে মুঠোফোনে আলাপকালে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জানিয়েছেন গত চারমাসে জেলায় ২শত ৩ কোটি টাকার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন মৌলভীবাজারের প্রবাসীরা।

জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় জেলা কর্মসংস্থান কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন, স্থানীয় সরকার উপপরিচালক মল্লিকা দে, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তানিয়া ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জাহিদ আক্তারসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

ওই সভায় জানানো হয়, ২০০৫ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রবাসে আছেন ২ লাখ ৫ হাজার ২৪জন। সোমবার থেকে ১ হাজার ১০ জনকে তাদের নিজ নামে ও ঠিকানায় বৈধপথে রেমিটেন্স পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেয়া হচ্ছে, এ প্রক্রিয়া এক মাস চলমান থাকবে। এছাড়াও বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের ঠিকানা জোগাড় করে প্রবাসীদের চিঠি পাঠানো হবে। এ প্রক্রিয়া চলমান থাকবে বলেও জানান জেলা প্রশাসক। তিনি বৈধভাবে দেশে টাকা পাঠিয়ে দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করারও অনুরোধ জানান।

জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশী ও তাদের প্রিয়জনদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে (হুন্ডি বা অন্য কোন অবৈধ পথে) প্রেরণ করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ এবং এতে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

(একে/এসপি/ডিসেম্বর ০৬, ২০২২)