বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটে কবিরাজের অপচিকিৎসায় ছেলে মো. সাকিবের মৃত্যুর পর সিভিল সার্জন, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেও বিচার না পেয়ে অবশেষে আদালতে মামলা করেছেন মোরশেদা বেগম মনি নামে অসহায় এক মা। আদালত বাগেরহাট সিআইডিকে পূর্নাঙ্গ তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। মোরশেদা বেগম মনি’র আইনজীবী অ্যাডভোকেট লিয়াকত আলী খান মঙ্গলবার বিকালে এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার কাছিকাটা এলাকার রেজাউল করিমের স্ত্রী মোরশেদা বেগম মনি জানান, তার ছেলে মো. সাকিবের চিকিৎসার জন্য ২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর কচুয়া উপজেলার সাইনবোর্ড বাজারের কবিরাজ শাহজাহান শেখের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। কবিরাজ সাকিবকে নানা রকম বড় রোগের কথা বলে নগদ ৩ হাজার টাকা নিয়ে আমার ছেলের নাকে সাইকেলের স্পোক দিয়ে গুতায়, নাকের মধ্যে এসিড জাতীয় এক ধরণের তরল পদার্থ ঢেলে দেওয়া হয়। এছাড়া তার নিজের তৈরি কিছু তরল ঔষধ ও বড়ি খেতে দেয়া হয়।

কবিরাজের চিকিৎসায় সাকিব আরও বেশি অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে অনেক বেশি অসুস্থ্য হয়ে পড়লে বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা জানান, লোহার সিক দিয়ে গুতানোর ফলে সাকিবের নাকের পর্দা ফুটো হয়ে গেছে। যার ফলে সাকিবের নাক ও ব্রেনে ইনফেকশন হয়ে গেছে। পরবর্তীতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা দেয়ার পর অবশেষে ২৭ মার্চ বাড়ি থেকে হাসপাতালে নেয়ার পথে সাকিবের মৃত্যু হয়।

কবিরাজের অপচিকিৎসায় ছেলের মৃত্যুর পর জেলা সিভিল সার্জন, সিভিল সার্জন, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেও বিচার না পেয়ে এখন আদালতে মামলা করেছি। আদালত মামলাটি বাগেরহাট সিআইডিকে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানানমোরশেদা বেগম মনি’র আইনজীবী অ্যাডভোকেট লিয়াকত আলী খান।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. মো. জালাল উদ্দিন জানান, মোরশেদা বেগমের অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই কবিরাজের অপচিকিৎসায় চেম্বরটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া কবিরাজের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত কবিরাজ শাহজাহান বলেন, এবিষয়ে আদালতে মামলা করা হয়েছে, তাই এ বিষয়ে আমার বক্তব্য আদালতেই দিব।

(এসএকে/এসপি/ডিসেম্বর ০৬, ২০২২)