গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল হামিদসহ অন্তত: ২৫ জন আহত হয়েছে। ছাত্রলীগের কমিটি গঠন নিয়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আহত ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল হামিদ(২৫), মাসুদ রানা (২৪) ও বনি ভূঁইয়া (২০)-কে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হযেছে। বাকীদেরকে বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার দিকে স্থানীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে তা সরকারী বঙ্গবন্ধু কলেজ চত্বর, পোষ্ট অফিস মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় পুলিশ ১০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে বিবাদমান দু’গ্রুপকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়ে। পরে খন্ড খন্ড ভাবে এ সংঘর্ষ শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।

দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন শাখা কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে জেলা ছাত্রলীগের মধ্যে দ্বন্দ্ব-কোন্দল চলে আসছিল। অতিসম্প্রতি গোপালগঞ্জ সদর, শহর ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে এ কোন্দল আরো চরমে ওঠে। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল হামিদ ও সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা , শহর ও কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে পদ বঞ্চিতরা। তারা নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শনে মাঠে নামে। শহরে একাধিক শো-ডাউন করে। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক-এর গ্রুপও পাল্টা জবাবে আলাদা শো-ডাউন করে।

এরই অংশ হিসাবে আজ বৃহস্পতিবার আলাদা আলাদাভাবে দুই গ্রুপ শহরে মিছিল বের করে। স্থানীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দুই রাস্তা দিয়ে দু’টি মিছিল মুখোমুখি হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয় এবং সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এ সময় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল হামিদসহ ২৫ নেতা-কর্মী আহত হয়।

ছাত্রলীগ নেতা মোঃ জাহিদ মুন্সী ঘোষিত ছাত্রলীগের কমিটিকে গঠনতন্ত্র পরিপন্থী উল্লেখ করে বলেন, সকলের মতামত নিয়ে এ কমিটি গঠন করা হয়নি। তিনি নতুন করে কমিটি গঠনের দাবি জানান।

জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি রেয়াজুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, আমরা জেলা ছাত্রলীগের অধিকাংশ নেতা-কর্মীরা নতুন আহবায়ক কমিটি সম্পর্কে কিছুই জানিনা। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক তাদের নিজেদের ইচ্ছা মাফিক সম্পূর্ন গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কমিটি ঘোষণা করায় আমরা শান্তপূর্নভাবে এর প্রতিবাদ করেছি। সম্মেলনের মাধ্যমে যেহেতু এ কমিটি গঠন করা হয়নি তাই ঘোষিত কমিটি বাতিলেরও তিনি দাবি জানান।

জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ও ত্যাগী নেতাদেরকেই কমিটিতে পদ দেয়া হয়েছে। সবাইকেতো আর পদ দেয়া যায়না। তা’ছাড়া ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতেই এবং সম্মতি অনুযায়ী আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করা হয়েছে। তবে আজকে যে ঘটনা ঘটেছে তাকে তিনি অনাকাংখিত বলে উল্লেখ করেন।

গোপালগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন মোল্যা জানান, পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় কোন পক্ষই অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এমএইচএম/এএস/অক্টোবর ১৬, ২০১৪)