নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার পশ্চিমে খাজুর ইউনিয়নের মধ্যে অবস্থিত আলিদেওনা পাখির গ্রাম। সেখানে গেলেই মুগ্ধ হয়ে উঠে মানুষ। স্থানীয়রা স্ব-উদ্যোগে গ্রামটিকে পাখি শিকার মুক্ত এলাকা ঘোষণা করেছেন। সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার পাখির বাস। ওই গ্রামের সীমানায় কোন পাখি প্রবেশ করা মানে পাখিটি নিরাপদ। আর এ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন গ্রামের সকলেই। পাখি শিকার রোধে গ্রামবাসী নিয়েছেন নানা উদ্যোগ। ফলে সারা বছরই সেখানে হাজার হাজার পাখির আগমন ঘটে। বিশেষ করে বাচ্চা উঠানোর মৌসুমে শামুকখোল ও বকের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে গ্রামটিতে প্রতিদিনই বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম ঘটে।

গ্রামটিতে প্রবেশের সময় দেখা যাবে সরু রাস্তার দুই ধারে থাকা গাছে লাগানো রয়েছে বিভিন্ন পাখির আদলে সাইনবোর্ড। সাইনবোর্ড গুলোতে পাখি শিকার রোধে বিভিন্ন আইন ও সচেতনতামূলক উপদেশ লেখা রয়েছে। ‘পাখি শিকার করবেন না, পাখি মারবেন না, পাখিরাও আমাদের মতো বাঁচতে চায়, পাখি এ সমাজের পরম বন্ধু, তাদের আগলে রাখতে সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে’ ইত্যাদি। আর এ কাজে গ্রামের মানুষদের এক কাতারে এনে প্রতিনিয়ত উদ্বুদ্ধ করছে স্থানীয় আলিদেওনা পাখি সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি নির্মল বর্মন।

নওগাঁর মহাদেবপুরে আলিদেওনা গ্রামে ভোরে হাজারো পাখির কিচির-মিচির শব্দে ঘুম ভাঙ্গে গ্রাম বাসির। জেলার সর্ববৃহৎ পাখি কলোনী আলিদেওনা গ্রামকে সরকারিভাবে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার দাবি স্থানীয়দের। গ্রামের সাধারণ মানুষের উদ্যোগে এখানে গড়ে তোলা হয়েছে পাখিদের নিরাপদ আবাসস্থল। এখানে রয়েছে হরেক রকম বক, শামুকখোল, রাতচোরা, সারস, মাছরাঙা, পানকৌড়ি ও বিভিন্ন প্রজতির ঘুঘুসহ নাম না জানা হাজার হাজার পাখি। গ্রামের আনাচে-কানাচে বেড়ে ওঠা বাঁশ ও গাছে গাছে সারাক্ষণ হাজার হাজার পাখিদের কিচির-মিচির শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে গ্রামটি। এ কারণে আলিদেওনা গামের নাম হয়েছে পাখি গ্রাম।

স্থানীয়দের মতে. শীতকালে এখানে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বেশি নজরে পড়ে। অতিথি পাখির আগমনে গোটা গ্রাম এখন মুখরিত হয়ে ওঠে। পাখি গ্রামের পাখিদের বাড়তি নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় পাখিপ্রেমী, সমাজসেবী ও পরিবেশবিদরা সরকারীভাবে অভয়রণ্য ঘোষণার পাশাপাশি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার দাবি করছেন।

(বিএস/এসপি/ডিসেম্বর ১৯, ২০২২)