তারেক হাবিব, হবিগঞ্জ : খোয়াই নদীর ২১টি স্পট থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। আর এ কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন চুনারুঘাট উপজেলার আব্দুর রাজ্জাক ও সেলিম আহমেদ নামে স্থানীয় সিন্ডিকেট। নিষিদ্ধ ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে নদীর প্রায় ২’শতাধিক স্পট থেকে অবাদে চলছে বালু উত্তোলন। যন্ত্রমানব ট্রাক্টরের মাধ্যমে বালু ও চরের মাটি পরিবহনের ফলে নদী পাড়ের গ্রামীণ সড়ক ও নদীর বাঁধ এক রকম ভেঙ্গেই গেছে বলা যায়। 

সরেজমিন দেখা গেছে, খোয়াই নদীর হবিগঞ্জ সদর অংশে উত্তরকুল, আনন্দপুর, সুলতান মাহমুদপুর, রামপুর, দেওকুড়া দক্ষিণ, মাহমুদাবাদ, মশাজান, ভাদৈ, লেঞ্জাপাড়া, আলমপুর, নুরপুর উত্তর, আলাপুর, লস্করপুরসহ মোট ৩৭৪. ২৬৫৬ একর নদী এলাকার প্রায় ১ কোটি ২১ লাখ ৭৪ হাজার টাকার বালু মহাল ইজারা নিয়েছেন রাজিয়া খাতুন নামে এক নারী। রাজিয়া খাতুন চুনারুঘাট উপজেলার আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী। আব্দুর রাজ্জাক পেশায় এডভোকেট হওয়ার বার কাউন্সিলের নীতিমালা রক্ষা করতে বালু মহাল কৌশলে ইজারা নিয়েছেন স্ত্রৗ রাজিয়া খাতুনের নামে। চড়াও মূল্যে বালুমহাল ইজারা নিয়ে নিষিদ্ধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে রাতদিন ২৪ ঘন্টাই চলে বালু উত্তোলন। খোয়াই নদীর চুনারুঘাট (নরপতি-ঘরগাও) অংশের নরপতি, চুরতা, ইছাকুট, দেউলগাও এবং আশ্রাবপুর, কাকাউস, রাজার বাজার এলাকার ইজারাদার সেলিম আহমেদ নামে এক ব্যক্তি। সেলিম চুনারুঘাট উপজেলার সাটিয়াজুড়ী এলাকার মৃত আশ্রাব মিয়ার পুত্র। কর্মজীবনের শুরুতে কনস্টেবল হিসেবে পুলিশে দীর্ঘদিন চাকরি করলেও হঠাৎ চাকরি ছেড়ে বালু মহালে মোটা অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করে রীতিমত আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছেন।

বেমালুম বালু ব্যবসায় পরিবার ও নিজের নামে অর্জন করেছেন একাধিক ব্রিকস, গাড়ী-বাড়িসহ অটেল সম্পত্তি। বালু উত্তোলনের পাশাপাশি এক্সেভেটর দিয়ে নদী তীরের ফসলী জমির মাটিও কেটে বিক্রি করছেন। কেউ কোন প্রশ্ন করলেই বলেন, ‘নদী চরের মাটি উপজেলা, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিমার্ণকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে’।

সরেজমিনে দেখা গেছে, খোয়াই নদীর দুইপাড়ের প্রায় ১’শতাধিক স্পটে এক্সেভেটর দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। প্রতিটা স্পটে গড়ে দৈনিক ৫০ হাজার টাকা মাটি উত্তোলণ করা হলে প্রতি মাসে সরকার হারাচ্ছে কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব বিনষ্ট হচ্ছে নদী চরের সবুজ ফসলি জমি। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ রফিকুল আলম জানান, জরুরী ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।

(টিএইচ/এসপি/ডিসেম্বর ২১, ২০২২)