গৌরীপুর প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের গৌরীপুরের দলিত সম্প্রদায়ের মেয়ে প্রিয়া রানী দাসের (১৯) স্বপ্ন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। ছোট থেকেই মেধাবী প্রিয়া পড়াশোনা করে সেই অনুযায়ী প্রস্ততি নিচিছলো। সাফল্যও এসেছে। সুযোগ পেয়েছেন দেশের অন্যতম বিদ্যাপীঠ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্ত অর্থাভাবে সেই স্বপ্ন ভেস্তে যেতে বসেছে প্রিয়ার। গৌরীপুর পৌর শহরের কালীপুর মধ্যমতরফ এলাকায় জরাজীর্ণ ভাড়া বাড়িতে প্রিয়ার পরিবারের বসবাস। তার বাবা দিলীপ দাস একটি পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধি। মা জয়ন্তী রানী দাস গৃহিণী। তিন-ভাইবোনের মধ্যে প্রিয়া দ্বিতীয়।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বাবার একার আয়ে সংসারের টানাটানি লেগেই থাকতো। তাই পড়াশোনার খরচ যোগাতে টিউশনি করতো প্রিয়া। স্থানীয় অনেকে বিদ্যুসাহীদের সহযোগিতা নিয়েছে। ২০১৯ সালে গৌরীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৩৯ ও ২০২১ সালে গৌরীপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.০০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় এই শিক্ষার্থী। এরপর উচ্চ শিক্ষার জন্য গুচ্ছ পদ্ধতির বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধাতালিকায় ৮৮৩৮তম হয়ে সুযোগ পেয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে। আগামী ২৭ থেকে ২৯ ডিসেম্বর তারিখের মধ্যে ভর্তি ফি জমা দিতে হবে। কিন্ত ভর্তির টাকা নেই তার পরিবারের কাছে।

প্রিয়া রানী দাস বলেন, অনেক কষ্টে পড়াশোনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েছি। আমি পড়াশোনা করে বিসিএস কর্মকর্তা হতে চাই। কিন্ত বাবা বলছে আর পড়াশোনার খরচ চালানো সম্ভব নয়। টাকার জন্য কি আমার পড়াশোনা থেমে যাবে?।

দিলীপ দাস বলেন, সকলের সহযোগিতা নিয়েই মেয়ের পড়াশোনা এগিয়ে নিয়েছি। এখন মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়ায় আনন্দিত হয়েছি। কিন্ত ভর্তি ও পরবর্তী খরচের চিন্তায় সেই আনন্দ মলিন হয়ে গেছে। ২৯ ডিসেম্বর ভর্তি ফি জমা দেয়ার শেষ দিন। কিন্ত এখনো ভর্তির টাকা যোগাড় হয়নি।

গৌরীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মিলটন ভট্টাচার্য বলেন, প্রিয়া রানী দাস আমাদের কলেজে থেকে এইচএসসি পাস করেছে। আমরা তার পড়াশোনায় নানাভাবে সহযোগিতা করেছি। সে দলিত সম্প্রদায়ের আলো। সেই আলো যেন নিভে না যায় সে জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করছি।

(এস/এসপি/ডিসেম্বর ২৭, ২০২২)