সঞ্জীব কুমার দাস, কাপাসিয়া : গাজীপুরের কাপাসিয়ায় কয়েকটি ইট ভাটায় গিলে খাচ্ছে কৃষি জমির টপ সয়েল ও খালের তীরের মাটি। প্রতি দিন রাতে প্রায় ২০/২৫ টি ড্রাম ট্রাকে করে এ মাটি নিয়ে যাচ্ছে ইট ভাটায় এতে করে জনগণের চলাচলের রাস্তাঘাট মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করা হচ্ছে। ভূমি দস্যুদের হাত থেকে রাস্তা, কৃষি জমির টপ সয়েল ও খালের তীরের মাটি রক্ষার দাবিতে উপজেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছেন স্থানীয় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. আমানত হোসেন খান। এর পর ও প্রশাসনের মন গলাতে পারেনি উপজেলার সাধারণ জনগন, এ রির্পোট লেখা পযর্ন্ত চলছে অবাধে চলছে কৃষি জমির মাটি কাটার কাজ।

একটি সূত্রে জানায়, উপজেলার কড়িহাতা ইউনিয়নের ইকুরিয়া কবিরের বাজার বেইলি ব্রিজ থেকে উত্তর দিকে মাটিকাটা গামী ইটের সলিং রাস্তাটি গত এক সপ্তাহে অধিক বোঝাইকৃত মাটিবাহী ড্রাম ট্রাকের বেপরোয়া যাতায়াতে জনগণের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাছাড়া দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও তিনটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষার্থী ও কয়েকটি গ্রামের জনগণ দিনের বেলা ড্রাম ট্রাকের বেপরোয়া গতির কারণে তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ পথ দিয়ে চলাচলে হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে। সারা রাত ট্রাক ও ট্রলির বিকট শব্দের কারণে রাতের বেলা বাড়িতে স্বস্তিতে ঘুমাতে পারছেন না স্থানীয় সাধারণ মানুষ। তাছাড়া স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের চাপে পড়ে অনেকেই তাদের কৃষি জমির টপ সয়েল বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। গত বছর খনন করা স্থানীয় একটি খালের তীরের মাটি জোর করে কেটে নিয়ে যাচ্ছে ওই প্রভাবশালী মহল। সাধারণ জনগণ মাটি কাটতে ও রাস্তা নষ্ট করতে বাঁধা দিলে রাতের বেলা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে প্রভাবশালী একটি মহলটি। তাই নিরূপায় হয়ে এলাকার সাধারণ মানুষ উপজেলা প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে একটি লিখিত আবেদন করেছেন।

স্থানীয় শিক্ষক হরিদাস সূত্র ধর জানান, সনমানিয়া ইউনিয়নের আড়াল বাজার এলাকার তিনটি ইট ভাটায় মাটি সরবরাহ করতে একটি প্রভাবশালী মহল তাদের এলাকার কৃষি জমির টপ সয়েল কেটে নিয়ে যাচ্ছে এবং সরকারী খাল ও কোটি কোটি টাকার ব্যায় করে নির্মিত রাস্তা নষ্ট করে দিচ্ছে। উপজেলায় আবেদন করার কারণে ভূমি দস্যুরা তাদেরকে প্রকাশ্যে গালিগালাজ করছে এবং প্রাণ নাশের হুমকি ধমকি দিচ্ছে বরৈ ও একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ.কে.এম গোলাম মোর্শেদ খান জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তার তদন্তের ভিত্তিতে পরবর্তী সময়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে কড়িহাতা ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুব আলম মোড়ল জানান, অবৈধভাবে এসব মাটি কাটার কারণে কৃষি জমি নষ্ট হচ্ছে, রাস্তাঘাট মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, রাস্তায় চলাচলে ও রাতে ঘুমাতে না পেরে এলাকাবাসী ভীষণ কষ্ট পাচ্ছে। এলাকার লোকজনকে নিয়ে তিনি গত কয়েকদিনে বার বার মাটি কাটতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু প্রভাবশালী ওই মহল তাদের কথায় কর্ণপাত করছেন না। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলেছেন।

(এসকেডি/এসপি/ডিসেম্বর ২৮, ২০২২)