রায়পুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বিদ্যালয় ও জনসাধারণের চলাচলের ৩টি রাস্তা বন্ধ করার চেষ্টা নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের মোল্লারহাট এলাকার এলকেএইচ উপকূলীয় উচ্চ বিদ্যালয় ও উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চরবংশী গ্রামের দেওয়ান বাড়ি এলাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে গত কয়েকদিনে বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে হামলা, ভাংচুর ও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। আবারো যেকোন মুহুর্তে পক্ষগুলোর মধ্যে সংঘর্ষের সম্ভাবনা রয়েছে বলে রোববার দুপুরে (১ জানুয়ারি) সরেজমিনে দেখা গেছে।

এলকেএইচ উকূলীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান জানান, বিদ্যালয়ের চলাচলের রাস্তার জমিটি নিজের দাবি করায় স্থানীয় রাসেল খলিফার সঙ্গে বিরোধের সূত্রপাত। তিনি আদালতে মামলা করলে তা খারিজ হয়ে যায়। এরপরও গত শুক্রবার রাস্তাটি ইটের দেওয়াল দিয়ে বন্ধের চেষ্টা করেন। বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মনির হোসেন মোল্লা রাস্তা বন্ধ না করতে বলেন। ওই সময় রাসেল ও তাঁর স্ত্রী নিশিতা আক্তার উর্মি মনির মোল্লাকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের অভিভাবকরা এসে রাস্তা ভেঙে দিয়ে রাসেল ও উর্মিকে পিটুনি দেওয়ার চেষ্টা করলে তাঁরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

অভিযোগের বিষয়ে রাসেল খলিফা বলেন, ‘আমাদের জমিতে আমরা প্রাচীর নির্মাণ করতে গেলে মনির মোল্লা আমাদেরকে মারধর করেছেন। তাঁরা আমাদের দেওয়াল ভেঙ্গে দিয়েছেন। আমার স্ত্রী উর্মিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’

ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মনির হোসেন মোল্লা বলেন, ‘রাসেল অন্যায়ভাবে বিদ্যালয়ের চলাচলের রাস্তাটি বন্ধ করতে চায়। তিনি আদালতে হেরে গিয়ে আবারো রাস্তা বন্ধের উদ্যোগ নেন। আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করলে অভিবাবকরা এসে প্রতিবাদ জানান। শিক্ষার্থী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

অপরদিকে দু’টি রাস্তা কাটা নিয়ে উত্তেজনা চলছে উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের দেওয়ান বাড়ি এলাকায়। জনসাধারণের জন্য নিজের জমির ওপর দিয়ে নিজ খরচে রাস্তাগুলো করে দেন স্কুল শিক্ষক মিজানুর রহমান। হঠাৎ করে স্থানীয় ইয়াকুব আলী, মোস্তফা বেপারী, আলাউদ্দিন মৃধা ও মহিউদ্দিন মৃধা গত বুধবার রাতের আঁধারে শিক্ষকের খামারমুখী নতুন রাস্তাটি কেটে দেন। এ ঘটনার জের ধরে ইয়াকুবের বাড়ির পথে স্কুল শিক্ষকের পুরাতন রাস্তাটি তিনি নিজেই কেটে বিচ্ছিন্ন করে দেন। এতে ইয়াকুবদের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এ নিয়ে মারামারিতে ৩ জন আহত হয়েছেন।

ইয়াকুব আলী বলেন, ‘আমি কারো রাস্তা কাটার সাথে জড়িত নই। অন্যায়ভাবে আমাদের যাতায়াতের পথ কেটে ফেলা হয়েছে। মারধর করা হয়েছে আমাদের ৩ জনকে।’

স্কুল শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমার জমির ওপর দিয়ে আমি তাঁদেরকে চলাচলের জন্য রাস্তা করে দিয়েছি। অথচ অন্য লোকের ভাড়াটিয়া হয়ে তাঁরা আমার নতুন সৃজিত রাস্তাটি কেটে দিয়েছে। এজন্য আমি আমার রাস্তা কেটে জমিতে চাষাবাদের উদ্যোগ নিয়েছি।’

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়–য়া বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ঘটনায় উভয় পক্ষ লিখিত অভিযোগ করেছেন। রাস্তা কাটার ঘটনায় মামলা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।’

(পিআর/এসপি/জানুয়ারি ০১, ২০২৩)