মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : জেলাজুড়ে কয়েক দিন ধরেই চলছে চিরচেনা শীতের তীব্রতা। দাপুটে শীতের কবলে ব্যস্ত জনজীবনে এক প্রকার ছন্দপতন। অসংখ্য চাবাগানের অবস্থান আর হাওর-পাহাড় বেষ্টিত জনপদ হওয়ায় মৌলভীবাজার ও চায়ের রাজধানী খ্যাত পর্যটন উপজেলা শ্রীমঙ্গলে কয়েকদিন যাবত চলছে টানা শৈতপ্রবাহ। 

শৈত প্রবাহের পাশাপাশি সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে বাড়ছে কুয়াশার তীব্রতাও,চলে সকাল ঘনিয়ে দুপুর পর্যন্ত। শীতের প্রকৃতিতে প্রতি বছর এমনিতেই পৌষ ও মাঘের মাঝামাঝি শৈতপ্রবাহ বাড়তে থাকে। তবে এই সময়ের শীতের চলমান তীব্রতা আরও কয়েকদিন থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন শ্রীমঙ্গল আবহাওায়া অফিসের ইনচার্য মো: আনিছুর রহমান।

মুঠোফোনে আলাপকালে আবহাওায়া অফিসের এই কর্মকর্তা জানান, পৌষ-মাঘের এই সময়ে এমনিতেই শৈত প্রবাহ বাড়তে থাকে। তবে এমন পরিস্থিতি কয়দিন থাকবে তা বলা যাচ্ছেনা। হয়তো সাপ্তাহের বেশিও থাকতে পারে। তিনি বলেন কয়েকদিন তাপমাত্রা উঠানামা করতে পারে।

এদিকে রাতে টানা শীত আর ঘন কুয়াশার কারনে এ অঞ্চলের সড়কগুলো দিয়ে চলাচলকারী দূরপাল্লার বাস,ট্রাকসহ বিভিন্ন প্রকারের ছোট-বড় যানবাহন চলছে বেশ ঝুঁকি নিয়ে। রাতের বেলা ঘন কুয়াশার কারনে অধিকাংশ যানবাহনগুলো হেডলাইটের আলোয় অনেকটা ধীরগতি নিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।

আবহাওয়া অফিসের সর্বশেষ তথ্য অনুয়ায়ী বুধবার (৪ জানুয়ারি) দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলে রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন ৩ জানুয়ারি ছিল ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের পরিচালক ডা: বিনেন্দু ভৌমিক বলেন,হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। বিশেষ করে শ্বাসকষ্ট নিয়ে শিশু ও বয়স্করা ভর্তি হচ্ছেন বেশি।

সরেজমিন সদর হাসপাতালের শিশুসহ কয়েকটি ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডে সিট বরাদ্ধ রয়েছে সর্বমোট ৫১ টি। তবে সিট সংখ্যা থেকে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা তার চেয়ে অনেক বেশি। এর বাহিরে অন্য ওয়ার্ডেও বাড়ছে ভর্তি রোগীর সংখ্যা।

এদিকে টানা শৈতপ্রবাহে বেশিরভাড় দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। বিশেষ এই সময়ে অনেক কৃষক ব্যস্ত বুরো চাষে। শীত উপেক্ষা করেও দেখা গেছে বুরো চাষিরা ভোর হতেই নেমে পড়ছেন হাওরে। তবে অনেকেই জীবন-জীবিকার তাগিদে শীত উপেক্ষা করেই ঘর থেকে বেড় হয়ে আসছেন।

(একে/এসপি/জানুয়ারি ০৪, ২০২৩)