ওয়াজেদুর রহমান কনক, নীলফামারী : রাতে ঘন কুয়াশা আর হিমেল ঠান্ডা হাওয়ায় গরম কাপড়েও কমছে না শীত। নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো রয়েছে চরম দুর্ভোগে। দিনে সূর্যের আলো থাকলেও ঠান্ডা বাতাসের কারণে স্বাভাবিক কাজকর্মে বিঘ্ন ঘটছে।

এদিকে ঠান্ডার কারণে দুর্ভোগে রয়েছে দিনমজুর, ছিন্নমুল ও খেটে খাওয়া মানুষ। শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা। শীতে বয়স্ক মানুষ শ্বাসকষ্ট আর সর্দিকাশিতে কাহিল হয়ে পরেছে। যে ঠান্ডা তাতে কম্বল গায়ে দিয়ে শীত নিবারন করা যাচ্ছে না। ঠান্ডায় সবচেয়ে বেশি কষ্টে রয়েছে বাড়ীর গৃহবধূরা। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত ঠান্ডা পানি ব্যবহার করায় হাত পা অসার হয়ে যায়। বেশিরভাগ গৃহবধূ ঠান্ডায় কাহিল হয়ে পরেছে। দেখা দিয়েছে চর্ম সংক্রান্ত রোগব্যাধী।

আজ জেলার সৈয়দপুর আবহাওয়া কার্যালয় সর্বনিন্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলায় বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ১৮ কিলোমিটার। ওই কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হাকিম জানান, চলমান মৃদু শৈত্যপ্রবাহ আরও দুই একদিন থাকতে পারে। এ মাসের মাঝামাঝি বা শেষাংশে আরেকটি শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে।

শীত দূর্যোগ মোকাবেলায় জেলায় বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৩১ হাজার কম্বল। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল করিম বলেন, ‘এসব কম্বল ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ইউনিয়ন পর্যায়ে বিতরণের জন্য বন্টন করে দেয়া হয়েছে। বিতরণ কার্যক্রম প্রায় শেষের দিকে।’ জেলায় ৬০ ইউনিয়ন চারটি পৌরসভা রয়েছে।

শীতের তীব্রতায় জেলায় বাড়ছে শীতজনিত রোগবালাই। এসব রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ২১৫ জন রোগী। এর মধ্যে ১০ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল ৩৬ জন।

ওই হাসপাতালের শিশু বিভাগের রেজিস্টার ডা. আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে শীতজনিত রোগির সংখ্যা বাড়ে হাসপাতালে। সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় শিশু ও বয়স্করা।’ এসময়ে গরম কাপড় পরিধান, বাশি ও ঠান্ডা খাবার না খাওয়া, রোদ না থাকলে শিশুদের ঘরের বাইরে বের না করা এবং কোন সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন তিনি।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা গোলাম রসুল রাখি বলেন, ‘শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে হাসপাতালের রোগির সংখ্যা বেড়েছে। অন্যান্য সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ রোগিকে প্রতিদিন আউটডোর এবং ইনডোরে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।’

(ওকে/এসপি/জানুয়ারি ০৫, ২০২৩)