আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : জেলার মুলাদী উপজেলার প্রমত্তা জয়ন্তী ও আড়িয়াল খাঁ নদীর চরকালেখা ইউনিয়নের বিভিন্ন অংশ থেকে প্রভাবশালী বালুগ্রাসী সিন্ডিকেট চক্রের অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ফলে গত কয়েকদিন থেকে ওই দু’নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন অংশে ভয়াবহ ভাঙ্গণ শুরু হয়েছে। নদী ভাঙ্গণে ইতোমধ্যে অসংখ্য পরিবার তাদের ভিটেমাটি হারিয়ে ফের নিঃস্ব হয়ে পরেছেন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মৃধারহাট লঞ্চ ও খেয়াঘাটসহ চরকালেখা ইউনিয়নের বিভিন্ন অংশে ভয়াবহ ভাঙ্গণে ইতোমধ্যে প্রায় বিশটি ঘর বাড়ি, কয়েক একর ফসলি জমি ও দোকানপাট নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। বর্তমানে চরম হুমকির মুখে রয়েছে প্রায় দু’শ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী মৃধারহাট বাজার ও নদীর তীরবর্তী অসংখ্য ঘরবাড়ি। যেকোন সময় নদী গর্বে বিলিন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এ বাজারটি। অনেক ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানপাট অন্যত্র সরিয়ে নিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ভাঙ্গণ রোধে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য এলাকাবাসি প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সূত্রমতে, জয়ন্তী ও আড়িয়াল খাঁ নদীর তীব্র ভাঙ্গণ উপজেলার চরকালেখা ইউনিয়নের তিনটি গ্রামের কয়েক হাজার পরিবারকে সর্বশান্ত করে দিয়েছিলো। নদী ভাঙ্গণ কবলিত অনেকেই আজো মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজে পাননি। গত কয়েক বছর পূর্বে ভাঙ্গণ কবলিত এলাকায় চর জেগে ওঠায় সর্বশান্ত পরিবারগুলো বাঁচার স্বপ্ন দেখেছিলেন।

এরইমধ্যে জেগে ওঠা চরের ওপর লোলুপ দৃষ্টি পরে স্থানীয় সরকার দলীয় প্রভাবশালী কতিপয় ভূমিদস্যুদের। তারা নদীর নাব্যতা সংকটের অজুহাত দেখিয়ে স্থানীয় বর্তমান সংসদ সদস্যর মাধ্যমে নৌ-মন্ত্রীকে ভুল বুঝিয়ে নদীর ড্রেজিংয়ের জন্য সরকারি ভাবে ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ করান। সেমতে গত এপ্রিল মাসের শেষভাগে নদী ড্রেজিংয়ের নামে সরকারি অর্থে বিআইডব্লিউটিএ’র তত্ত্বাবধানে বালুখেকোরা অপরিকল্পিত ভাবে ড্রেজার দিয়ে জেগে ওঠা চর কেটে বালু লুটের জমজমাট ব্যবসা করার কারণেই ছয় মাসের ব্যবধানে এসব এলাকায় ফের ভাঙ্গণ শুরু হয়েছে।

(টিবি/এএস/অক্টোবর ১৯, ২০১৪)