স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ গিয়াসউদ্দীন মিয়া ভারতের আসাম রাজ্যের শিলচরে অবস্থিত কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রয়োদশ প্রতিষ্ঠা দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেন। তিন দিনব্যাপী নানা বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদযাপিত এই প্রতিষ্ঠা দিবসের শুরুতে তিনি আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর রাজীব মোহন পন্ত-এর সাথে যৌথভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধী এবং শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির নবনির্মিত কম্পিউটার সেন্টার ভবন উদ্বোধন করেন এবং পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে নবনির্মিত অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অবজারভেটরি-এর উদ্বোধনে অংশগ্রহন করেন। এসময় বশেমুরকৃবি, বাংলাদেশ এবং স্বাগতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হতে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় আরও জানায়, স্বাগতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু মঞ্চে মূল অনুষ্ঠান হয়।

আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দের সংবর্ধনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ভারতের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক সুদীপ্ত রায়। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশেষ অতিথি ডক্টর কালাচাঁদ সাইন, পরিচালক, ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউট অফ হিমালয়ান জিওলজি, দেরাদুন, ভারত। তিনি হিমালয় অঞ্চলের প্রেক্ষাপটে পরিবেশ, অর্থনীতি এবং টেকসই উন্নয়নের ওপর আলোকপাত করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বশেমুরকৃবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর মোঃ গিয়াসউদ্দিন মিয়া বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে নিকট প্রতিবেশী হিসেবে এ অঞ্চলের মানুষের সর্বাত্মক সহযোগীতার কথা অত্যন্ত কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি এ অঞ্চলের গণমানুষের নাড়ির টানের ব্যাপারে বক্তৃতায় তাঁর অনুভূতি ব্যক্ত করেন। ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানগত কারনে অত্যন্ত নিকট প্রতিবেশী দু’দেশের কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে বৈজ্ঞানিক ধ্যান-ধারনা ও প্রযুক্তি আদান-প্রদানের বিষয়টি তাঁর বক্তৃতায় বিশেষ গুরূত্ব পায়। তিনি বাংলাদেশে উচ্চতর কৃষি শিক্ষা ও গবেষণার উৎকর্ষতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা এবং বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে একাডেমিক এবং গবেষণা সহযোগিতা বিনিময়ের প্রয়োজনীয়তার উপর বিশেষভাবে আলোকপাত করেন।

এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ এবং ভারতের আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে দ্বি-পাক্ষিক গবেষণা কার্যক্রম এবং অন্যান্য একাডেমিক অংশীদারিত্বের বিশাল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করা হয়। আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর তাঁর সভাপতির ভাষনে আনন্দ প্রকাশ করেন যে, এই চুক্তির ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন পরিবর্তিত বিশ্বপরিস্থিতিতে উচ্চশিক্ষায় সৃষ্ট চ্যালেঞ্জের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলবে। অনুষ্ঠানের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক দীপেন্দু দাস। এছাড়াও অনুষ্ঠানে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর একটি সুনির্মিত তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। দিনশেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শেষ হয়।

(এসআর/এএস/জানুয়ারি ২৩, ২০২৩)