রাজন্য রুহানি, জামালপুর : যমুনা সারকারখানায় যান্ত্রিক ত্রুটিতে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পাঁচ সদস্যদের তদন্ত কমিটি করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার তারাকান্দিতে অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ সার উৎপাদনকারী এ প্রতিষ্ঠান (জেএফসিএল) চলতি ভরা মওসুমে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চাহিদাপূরণে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে পাঁচ সদস্যদের তদন্ত কমিটি করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। দুর্ঘটনার বিষয়টি রহস্যজনক হওয়ায় কারখানার ভেতরে ও বাইরে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ।

জেএফসিএল সূত্র জানায়, সম্প্রতি যমুনা সার কারখানার অ্যামোনিয়া প্লান্টের এনজি বুস্টার কমপ্রেসারে মাত্রাতিরিক্ত নাইট্রোজেন অপচয়সহ নানা সমস্যা দেখা দেয়। কর্তৃপক্ষ এনজি বুস্টার ক্রয় ও পুনঃস্থাপনের জন্য বিষয়টি আন্তর্জাতিক কোম্পানি 'ইনগার্সল-রেন্ড (ইন্ডিয়া) লিমিটেড'কে অবগত করে। পরে ইনগার্সল-রেন্ড কর্তৃপক্ষ কারখানা পরিদর্শনের জন্য তাদের ডেপুটি ম্যানেজার (সার্ভিস) ও ভারতীয় বিশেষজ্ঞ মি. তানাজি এস. পন্দেকার-এর নেতৃত্বে তিন সদস্যের টিম পাঠায়। ওই টিমের অন্য দুই সদস্য হলেন ইনগার্সল-রেন্ড'র টেরিটরি ম্যানেজার (সার্ভিস) মো. ইমামুল সর্দার এবং মার্কেটিং প্রতিনিধি কসমো মার্কেটিং কনসালটেন্টস প্রাইভেট লিমিটেডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম।

কারখানার নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ভারতীয় বিশেষজ্ঞ মি. তানাজি এস. পন্দেকার রবিবার বিকেলে কারখানার অ্যামোনিয়া প্লান্টের এনজি বুস্টার কমপ্রেসার পরিদর্শন করছিলেন। এসময় তিনি একটি ভুল বাটনে চাপ দিলে বিকট আওয়াজে অ্যামোনিয়া প্লান্ট বন্ধ হয়ে যায়। এতে মুহূর্তেই ইউরিয়া সার ও অ্যামোনিয়া উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে পড়ে। বিকট আওয়াজে কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার লোকজন দিগ্বিদিক ছুটোছুটি করতে থাকেন। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি প্রথমে স্বাভাবিক বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল থেকে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হয়।

এ ব্যাপারে কারখানার ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক (এমটিএস) মো. আফাজ উদ্দিন জানান, 'আমি ও কারখানার মেশিনারিজ প্রধান ভূপতি চন্দ্র বিশ্বাসের সাথে ভারতীয় বিশেষজ্ঞ মি. তানাজি এস.পন্দেকার এনজি বুস্টার কমপ্রেসারের বিভিন্ন প্যারামিটার ঘুরে দেখছিলেন। এসময় এমটিএস বিভাগের কয়েকজন কর্মচারী ওভারটাইম সংশ্লিষ্ট কিছু জটিলতা নিয়ে আমার কাছে আসেন। তাদের সাথে আমি আলাদাভাবে কথা কথা বলায় আমার অনুপস্থিতিতে ভূপতি চন্দ্র বিশ্বাস অ্যামোনিয়া শিফট ইনচার্জ ফজলুল হককে বিশেষজ্ঞের সাথে থাকার জন্য বলেন। পরিদর্শন চলাকালে বিকেল ৩.৪৫টায় হঠাৎ অ্যামোনিয়া কমপ্রেসার বন্ধ হয়ে যায়। এতে অ্যামোনিয়া ও ইউরিয়া সার উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে।'

(আরআর/এসপি/জানুয়ারি ২৩, ২০২৩)