আসাদ সবুজ, বরগুনা : কুচক্রীমহল ও ষড়যন্ত্রকারীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক) ছড়ানো মিথ্যা, ভিত্তিহীন, গুজব ছড়ানোকে কেন্দ্র বরগুনা -১ আসনের জনসাধারণের উদ্দেশ্যে একটি বার্তা প্রদান করেন বরগুনা-১ আসনের গণ মানুষের নেতা এস এম মশিউর রহমান শিহাব। বার্তাটিতে তার (মশিউর রহমান শিহাব) ব্যবসায়িক জীবন, রাজনৈতিক ইতিহাসসহ বরগুনা-১ আসনের মানুষের কথা তুলে ধরেছেন তিনি।

এস এম মশিউর রহমান শিহাবের বরগুনার বাসীর প্রতি দেওয়া বার্তাটি হুঁ বাহু তুলে ধরা হলো।

বরগুনা বাসীকে দেওয়া এই বার্তায় এস এম মশিউর রহমান শিহাব বলেন, "প্রিয় বরগুনাবাসী, আমার সালাম ও শুভেচ্ছা জানবেন। আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ও ব্যবসায়িক সাফল্য দেখে দীর্ঘদিন ধরে ঈশ্বর্নিত হয়ে একটি কুচক্রিমহল আমার বিরুদ্ধে নানা অপ-প্রচার চালিয়ে আসছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এরা আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এদের অধিকাংশই ঠিকানাবিহীন। ভুয়া নাম পরিচয় ব্যবহারকারী।

এরা প্রথমে মিষ্টি কথা বলে টাকা দাবি করে। পরে টাকা না পেয়ে অপপ্রচার শুরু করে। ফেসবুক এদের প্রধান হাতিয়ার। চাঁদাবাজিই এদের মূল লক্ষ্য। এ চক্রটি শুধু যে আমার বিরুদ্ধে এসব অপ-প্রচার করছে তা নয়। সারা দেশেই এমন একটি চক্র গড়ে উঠেছে যারা ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবে এসব প্রতারণা বা অপপ্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। ফেসবুক সর্বস্ব এসব প্রতারকচক্রের মূল পুজিই হচ্ছে অপ-কৌশল আর অপ-প্রচার। তাই এসব চক্রের অপ-প্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য আমি আমার সকল প্রিয়জনদের অনুরোধ জানাচ্ছি।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব চক্রের মূলে রয়েছে জামাত-বিএনপি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরও রয়েছে। আমার ক্ষেত্রে দুই গ্রুপেরই উপস্থিতি টের পাচ্ছি। যারা সচেতন নাগরিক তারা নিশ্চয়ই জনেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সর্বপ্রথম যে বিষয়টি নিশ্চিৎ করতে হয় তা হলো ভ্যাট-ট্যাক্স। আমার কোন গোপন ব্যবসা নেই। সরকারকে ট্যাক্স দিয়ে প্রকাশ্যে ব্যবসা করি। রাজধানী ঢাকার মগবাজারে আমার অফিস। আমার ব্যবসা বাণিজ্য-আমার উত্থান-পতন সব বিছু জানতে সরাসরি আমার অফিসে এসে জেনে নেওয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ রইলো।

যারা কষ্ট করে ব্যবসা বাণিজ্য করেন। দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখেন, তারা জানেন, ব্যবসা করতে হলে কত কাঠখড় পোড়াতে হয়। কত প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হয়। কত ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল টপকাতে হয়। আর যারা ব্যবসার পাশাপাশি রাজনীতি করেন, দেশের জন্যে কাজ করেন, দেশের অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে চান তাদের জন্যে রয়েছে আরও অনেক বাড়তি ঝুঁকি, বাড়তি হুমকি। আমার ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়।

আর যারা কিছুই করেন না। যারা রাজনীতিকে বিক্রী করেন, যারা রাজনৈতিক পদপদবীকে সম্বল করে দালালি করেন, তারা আমার মত কাউকে ছোট করতে উঠে পড়ে লাগবেন এটাই স্বাভাবিক।

প্রিয় বরগুনাবাসী, বিভিন্ন সময়ে অনেক মেধাবী তরুণের চাকরি জন্যে আমি সহযোগিতা করেছি। নিস্বার্থভাবে অনেক ভুক্তভোগী চাকরিজীবীর পাশে দাড়িয়েছি। কিন্তু কখনও কোনদিন কাউকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে আমি টাকা নিয়েছি? কাউকে বদলি করিয়ে দেওয়ার কথা বলে আমি টাকা নিয়েছি? প্রজেক্ট পাশ করিয়ে দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছি? প্রতারণার মাধ্যমে কারও টাকা মেরে দিয়েছি? কিংবা ভাড়াটে কোন সন্ত্রাসীকে কারও বিরুদ্ধে লাগিয়ে দিয়েছি? কাউকে অসম্মান করেছি? রাজনৈতিক ঔদ্ধত্য দেখিয়েছি কোথাও প্রভাব খাটিয়েছি? এমন তিল পরিমান কোন অভিযোগ যদি কেউ আমাকে দিতে পারেন, আর তার যদি প্রমান মেলে তাহলে আমি কথা দিচ্ছি আর কোন দিন আমি রাজনীতি করবো না। বরগুনা ছেড়ে চলে যাবো। আর যদি এসব অভিযোগ না থাকে তাহলে আপনাদের কাছে আমার দাবি আছে।

আমি জানি ভালো কাজের শত্রু বেশি। তবুও কষ্টার্জিত অর্থের একটি বড় অংশ খরচ করি আমি বরগুনার দরিদ্র-অসহায় মানুষের কল্যাণে। হতদরিদ্র অসহায়, শীতার্ত, রোগাক্রান্ত, প্রতিবন্ধী কিংবা কন্যাদায়গ্রস্থ পিতা-মাতা আর অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্যে আমার সামান্য প্রচেষ্টার কথা আমি বলতে চাই না। স্থানীয় মসজিদ-মন্দীর আর মাদ্রাসার উন্নয়নে আমি চেষ্টা করেছি পাশে থাকার।

ব্যবসা করা অপরাধ নয়। ব্যবসা করা হালাল। অন্যের অর্থ-বিত্ত নিয়ে সমালোচনা না করে, অন্যের অর্থ-বিত্তের দিকে তাকিয়ে না থেকে, অন্যের অর্থ মেরে না দিয়ে নিজের মত করে ক্ষুদ্র কোন ব্যবসা চালিয়ে মাথা উচু করে বেঁচে থাকাটাই প্রকৃত মানুষের কাজ। পৃথিবীর সকল ধর্ম তাই বলেছে।

প্রিয় বন্ধুগন, আমি দেশের টাকা বাইরে পাচার করি না। বিদেশিদের সাথে আমার ব্যবসা আছে বিদেশিদের কে বাংলাদেশের এনে সরকারের ডেভেলপমেন্টে কাজ করেছি। কিন্তু বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কোন দেশে আমার বাড়ি নেই। বাংলাদেশেই আমার জন্ম। বাংলাদেশেই আমার মৃত্যু হবে। আমার কবর হবে বরগুনায়। আমার রক্তে মুক্তিযুদ্ধের উম্মাদনা। আমি দেশরত্ন, জননেত্রী শেখ হাসিনার কর্মী, শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতেই আমি রাজনীতি করি। শেখ হাসিনার নির্দেশেই আমি দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে দিনান্ত পরিশ্রম করি। আমার জ্ঞান, আমার বিবেক, আমার বুদ্ধিমত্তার সবটুকু দিয়ে দেশের জন্য কাজ করে যেতে চাই। বাংলাদেশের উন্নয়ন আর অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখাই আমার জন্য মুক্তিযুদ্ধ বলে আমি মনে করি। আপনাদের প্রতি অনুরোধ আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না, ঐক্যবদ্ধ থাকবেন, আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌছাবই ইনশাল্লাহ।

সবশেষে বলতে চাই, সমালোচনা করা সহজ। ষড়যন্ত্র করা সহজ। কিন্তু ভালো কিছু করে দেখানোটা অনেক কঠিন। আসুন ভালো কিছু করার চেষ্টা করি। সবাই মিলে দেশটাকে এগিয়ে নেই। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের লক্ষ্যে আমরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করি সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন। সবার জন্য শুভ কামনা। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চিরজীবী হোক শেখ হাসিনা দীর্ঘজীবী হন।"

(এএস/এসপি/জানুয়ারি ২৬, ২০১৩)