কুমিল্লা প্রতিনিধি : কুমিল্লা মহানগরীর বড় বড় বাজারে এখন বিভিন্ন মাছের ভিতরে ওজন বাড়ানোর জন্য বিক্রেতারা বড়শির কাঁটা, পাথর, মার্বেল এবং কেঁচো ভিতরে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। এতে মারাত্মকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

শনিবার রাতে কুমিল্লা শহরতলীর পালপাড়া এলাকার মনির হোসেন রাজগঞ্জ বাজার থেকে এক কেজি শিং মাছ কিনেছেন ৮শ' টাকা দিয়ে। ১ কেজিতে ২০টি শিং মাছ হয়েছে। সে ২০টি শিং মাছের ভিতর পাওয়া গেছে ২০টি বড়শির কাঁটা, পাথর, কেঁচো। প্রায় ২শ’ গ্রামের মতো হবে বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী শিউলি আক্তার।
পালপাড়ার মনির হোসেন জানান, ঢাকায় এ্যাপোলো হসপিটালের ডাক্তার আব্দুল মান্নান সরকারের চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। আমাকে ডাক্তার বলেছে রক্তের জন্য শিং মাছ খেতে হবে। সেই সুবাদে আমি শনিবার সন্ধ্যায় রাজগঞ্জ এলাকা থেকে ১ কেজি শিং মাছ ৮’শ টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে যাই। রবিবার সকালে আমার স্ত্রী শিউলি আক্তার দু’টি শিং মাছ রান্না করে দেয়। খাবার খাওয়ার সময় আমার গালে কাঁটা বাধে। তখন আমি বের করে দেখি বরশির কাটা। আল্লাহ আমাকে অল্পের জন্য রক্ষা করছে। শিং মাছ নাকি এগুলি মরণ ফাঁদ।

তিনি আরো জানান, পরে সবগুলো মাছ কেটে কেটে দেখা যায় ২০টি শিং মাছের ভিতর ২০টি বড়শির কাটা রয়েছে। সেই কাঁটাগুলো নিয়ে রাজগঞ্জ বাজারে আমি আসি। যার কাছ থেকে মাছ কিনেছি তাকে বললে সে বলে আমি শিং মাছ বিক্রি করি না। আপনি আমার কাছ থেকে কিনেননি। পরে রাজগঞ্জ বাজার অনেকক্ষণ ঘুরাঘুরির পর এক তরকারি ওয়ালার সাথে কথা বলে এগুলি দেখালাম। তখন তিনি বলেন, ভাই আল্লাহ আপনাকে রক্ষা করেছে। মাছের ভিতর শুধু বড়শির কাঁটা নয়- মাছে ওজন বাড়ানোর জন্য পাথর, মার্বেল, পেরেক, কেঁচো, মাটি ব্যবহার করা হয়। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত বলে জানিয়েছেন তরকারি ওয়ালা।
মনির হোসেনের স্ত্রী শিউলি আক্তার জানান, আমার স্বামীর জন্য তাড়াহুড়া করে দু’টি শিং মাছ রান্না করে দিই। কিন্তু সে মাছের ভিতর বড়শির কাঁটা চোখে পড়েনি। সে খাওয়ার সময় তার গালে বেঁধে যায়। পরে অন্য মাছগুলো কেটে দেখি সবগুলি মাছের ভিতর বড়শির কাঁটা, পাথর, কেঁচো দেখতে পাই। আমার স্বামী অসুস্থ। তিনি ডাক্তারের চিকিৎসায় রয়েছেন। কিছু প্রতারকের জন্য ভালো মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়বে। তার একটি প্রমাণ এই শিং মাছ।

(এইচকে/জেএ/অক্টোবর ১৯, ২০১৪)