শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : জোড়া খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট। প্রতিপক্ষরা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে ৩১টি বাড়ি। আগুন নেভাতেও হিমসিম খেয়েছে ঘোড়াঘাট থানা এবং পার্শ্ববর্তী গাইবান্ধার পলাশবাড়ী ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। অনেক অনেক চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছেন তারা।

গতকাল বৃহস্পতিবার আনুমানিক বিকেল ৪টায় ঘোড়াঘাট ইউনিয়নের চুনিয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় আতংক ও উত্তেজনা পরিস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন ছিলো পুরো এলাকা।গ্রেফতার এড়াতে বাড়ি গুলো পুরুষ শূণ্য। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভাতে ছিলো ব্যস্ত।

স্থানীয় বাসিন্দা মজিবুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে দাফন করা হয়েছে নিহত দুজনকে। এর কিছুক্ষণ পর পরই কিছু স্থানীয কতিপয় যুবক সংঘবদ্ধভাবে আগুন ধরিয়ে দেয় বাড়িগুলোতে। ক্ষুতিগ্রস্থ হয়েছেন অনেকেই। তাতক্ষণিক ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান জানা যায়নি।

ক্ষতিগ্রস্ত মমেনা বেগম জানান, ‘নিহতদের মরদেহ দাফন করার পর এলাকার বেশকিছু ছেলে ধারালো অস্ত্র, লাঠি নিয়ে অনেককে খুঁজে বেড়ায়।একপর্যায়ে পেট্রল ঢেলে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বাড়িগুলোতে। তারা বাড়িতে থাকা গরু-ছাগলসহ অন্যান্য জিনিস লুটও করে নিয়ে যায়।'

আয়শা খাতুন জানান, চামার স্বামী ভ্যান চালক। তিনি ঘটনার পর এলাকা ছেড়েছেন ভয়ে। যদি পুলিশ ধরে নিয়ে যায়, এই ভয়ে।

ফায়ার সার্ভিসের ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মনজিল হক জানান, বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আর শংকার কারণ নেই।কতটি ঘর পুড়ে গেছে এবং ক্ষয়-ক্ষতির কতো এখনই তা বলা যাচ্ছে না।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসান কবির জানান, 'ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক। সাধারণ মানুষ এলাকা ছাড়ার কোন প্রশ্নই উঠেনা। যারা অপরাধী তারা থাকবে ভয়ে।সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে আমরা বদ্ধ পরিকর।'

প্রসঙ্গত: বুধবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে মনোয়ার হোসেন মিম (২৪) ও রাকিব হোসেন (২৩)। দুই যুবক নিহত হন। আহত হন অন্তত দুইজন। ৪ নং ঘোড়াঘাট ইউনিয়নের খোদাদপুর চারমাথা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

(এস/এসপি/জানুয়ারি ২৭, ২০১৩)