স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত পদযাত্রাকে ‘গণতন্ত্রের জয়যাত্রা’ বলে দাবি করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আমাদের এ পদযাত্রা গণতন্ত্রের জয়যাত্রা, এ পদযাত্রা সভ্যতার জয়যাত্রা। আমাদের এ পদযাত্রা মানুষের অধিকার আদায়ের জয়যাত্রা, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জয়যাত্রা, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার জয়যাত্রা।

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং ১০ দফা দাবি আদায়ে সোমবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল স্কুলের সামনে থেকে এ পদযাত্রা কর্মসূচি উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। পরে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটের দিকে জুড়াইন রেলগেটের দিকে পদযাত্রা শুরু হয়।

ক্ষমতাসীনদের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেছে। তারা এখন প্রমাদ গুনছে। তারা প্রতিদিন জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। আজকে চালের দাম কত হয়েছে? ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে বলেছিল না? এখন কত খাচ্ছেন। ডালের দাম কত, লবণের দাম কত, আটার দাম কতো। পুরান ঢাকাসহ সারাদেশে গ্যাস নেই। সব খেয়ে ফেলেছে। বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। প্রতিটি দ্রব্যের দাম বাড়িয়েছে। দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে জনগণের পকেট কাটছে। আর সেই টাকা তারা লুট করে বিদেশে পাচার করছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, কালকে রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আওয়ামী লীগ নাকি পালায় না। এখানে দাদা (গয়েশ্বর চন্দ্র) আছেন, ভাল বলতে পারবেন। এক এগারোতে কারা কারা পালিয়েছিল সবাই জানে। কিন্তু পালায়নি একজন, তিনি হলেন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া। তিনি পরিষ্কার বলেছিলেন, ‘বিদেশে আমার কোনো জায়গা নেই। এই দেশ আমার এই মাটি আমার। আমার জন্ম এখানে মরলেও এখানে মরবো।’ এই দেশের মানুষ সব জানে। কে কখন কোথায় পালায়, কেমন করে পালায় সবাই জানে।

তিনি বলেন, এখনো সময় আছে গত ১৪/১৫ বছর ধরে দেশের মানুষের ওপর যে অত্যাচার করছেন তাতে মানুষের পিঠ এমনভাবে দেয়ালে ঠেকে গেছে আপনারা আর কোনো রাস্তা খুঁজে পাবেন না। ওবায়দুল কাদের সাহেব- পালাবেন কোন দিকে। একটা কবিতা আছে- ‘কোন দিকে পালাবে তুমি। কোনো দিকে পালাবার পথ নাই। উত্তরে উত্তর পর্বতমালা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। কোন দিকে পালাবে তুমি।’ তাই এখনো বলছি সময় আছে, আমাদের যে ১০ দফা দাবি তা মেনে নিয়ে পদত্যাগ করুন। সংসদ বাতিল করুন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান আবার চালু করে নতুন নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে একটা অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন করুন। যে নির্বাচনে জনগণ অংশগ্রহণ করতে পারবে, ভোট দিতে পারবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, গত দুই নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন, কেউ ভোট দেয়নি। নিজেরা (আওয়ামী লীগ) ভোট করেছে। একটা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায়, অন্যটা আগের রাতে। এমন ভোট জনগণ আর চায় না।

তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আমাদের এমপি সাত্তার সাহেব (উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া) পদত্যাগ করলেন। তারপর তিনি নিজে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করতে গেলেন। আমরা তাকে বহিষ্কার করলাম। এখন তাকে জেতানোর জন্য সব নীতি-নৈতিকতা বাদ দিয়ে আপনারা (আওয়ামী লীগ) নিজেদের প্রার্থীকে প্রত্যাহার করেছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীকে দুদিন ধরে পাওয়া যাচ্ছে না, গুম। অর্থাৎ সাত্তারকে জেতানোর জন্য এখন নির্বাচন ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছেন। আপনারা মাগুরার কথা বলেন? ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে মাগুরার দাদা বানিয়েছেন।

মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় পদযাত্রাপূর্ব সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপি নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আজিজুল বারী হেলাল, মীর সরাফত আলী সপু, নবী উল্লাহ নীব, ইশরাক হোসেন, সাইফুল আলম নীরব, মীর নেওয়াজ আলী, হাবিবুর রশীদ হাবিব, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন ও তানভীর আহমেদ রবিন প্রমুখ।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ৩০, ২০১৩)