স্টাফ রিপোর্টার : সিঙ্গাপুর ঘুরে নয় বাংলাদেশের কৃষিপণ্য নিয়ে জাহাজ সরাসরি মধ্যপ্রাচ্য যেতে পারবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) সচিবালয়ে কৃষিপণ্য ও আলু রপ্তানির অগ্রগতিবিষয়ক সভার শুরুতে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমি দুবাই গিয়েছিলাম। এ নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে আগেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। আমরা তাতে সহায়তা করেছি। মধ্যপ্রাচ্যে সরাসরি আমরা শাক-সবজি ও ফলমূল পাঠাতে পারবো।’

মন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রতি দুবাই বন্দরের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা হয়েছে। সিঙ্গাপুর না হয়ে সরাসরি যেতে পারলে সবজি নিয়ে চার-পাঁচদিনে আমাদের জাহাজ দুবাই যেতে পারবে।’

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে আমাদের প্রতিযোগী পাকিস্তান, ভারত ও তুরস্ক। ভারত আলু রপ্তানি করে। এসব দেশের পণ্যবাহী জাহাজ সরাসরি দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের বন্দরগুলোতে যেতে পারে। কিন্তু আমাদের জাহাজ সিঙ্গাপুর হয়ে যেতে হয়।’

তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনে জাতির কাছে আমরা অঙ্গীকার করেছিলাম যে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলবো। সত্যিকার অর্থে এখন মানুষ না খেয়ে থাকে না। অন্তত দুবেলা ভাত খেতে পারেন। আমরা সেই লক্ষ্যে পৌঁছেছি। এখন আমাদের লক্ষ্য মানুষকে পুষ্টিসমৃদ্ধ নিরাপদ খাদ্য দেওয়া। অর্থাৎ সার্বিকভাবে খাদ্যনিরাপত্তার বিভিন্ন দিকগুলোতে জোর দেবো এবং সর্বাত্মকভাবে আমরা তা বাস্তবায়ন করতে চাই।’

খাদ্যনিরাপত্তার ক্ষেত্রে আমাদের অনেকটা অর্জন হয়েছে দাবি করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘চর ও হাওর এলাকায়, যে অঞ্চলকে আমরা বলতাম, কৃষিতে অনুন্নত। তাদের পরিবেশও প্রতিকূলে। কিন্তু সেই এলাকার মানুষ দুবেলা খেতে পারেন। এখন আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ হলো, পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার সরবরাহ করা।’

তিনি বলেন, ‘সেই কারণে তিনটি বিষয় সামনে রেখে আমরা অগ্রসর হচ্ছি। কৃষিকে আমরা আধুনিকীকরণ করবো, যান্ত্রিকীকরণ করবো ও কৃষিকে লাভজনক করতে বাণিজ্যিকীকরণ করবো। এজন্য স্থানীয় বাজার ও আন্তর্জাতিক বাজার দুটোতেই জোর দিতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে যেতে হলে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে। খাদ্যের মান বজায় রাখতে হবে। আমরা সেইলক্ষ্যে কাজ করছি। যদিও করোনা মহামারির কারণে দুই থেকে আড়াই বছর আমরা অনেক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারিনি।’

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে কৃষকরা সবসময় পর্যাপ্ত দাম পান না। সবজি-ডিম ও মাছের উৎপাদন বেশি হলেও কৃষকরা তা বিক্রি করতে পারেন না। এজন্য আন্তর্জাতিক বাজারকে লক্ষ্য বানাতে হবে।

আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্য রপ্তানি করতে হলে মান বাড়াতে হবে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘শ্যামপুরে আমাদের একটি প্যাকিং হাউস আছে। কিন্তু লোকেশন ভালো না। এটির আধুনিকায়ন চলছে। পূর্বাচলে আরেকটি প্যাকিং হাউস করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই একর জমি দিয়েছেন। সেখানে একটি ল্যাবরেটরিও হবে। এটির সার্বিক পরিকল্পনা শেষ। দ্রুতই এটি একনেকে যাবে। তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করতে পারবো বলে আশা করছি।’

(ওএস/এএস/জানুয়ারি ৩১, ২০২৩)