সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : চিংড়ি ঘেরের একটি ডোবা থেকে পাইপ ও গুলি রেখে দিয়ে পুলিশ দিয়ে দিয়ে উদ্ধার করিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর চেষ্টার ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।

রবিবার সকাল ৯টার দিকে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের নারী কেলেঙ্কারীর নায়ক যুবলীগ নেতা সাঈদ মেহেদীর চিংড়ি ঘেরের একটি ডোবা থেকে এসব উদ্ধার করা হয়।

গ্রামবাসি জানায়, কালীগঞ্জ উপজেলার পানিয়া গ্রামের শামছুদ্দিন আহমেদের ছেলে উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদীর সঙ্গে একই গ্রামের মৃত শামছুদ্দিন শানা ওরফে বাচা খোকার ছেলে আব্দুল জব্বারের এক খাস জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে।
ওই জমি থেকে আব্দুর জব্বারকে উচ্ছেদ করার জন্য সাঈদ মেহেদী দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে আসছিল। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ ওয়াহেদুজ্জামান বিষয়টি জানতে পেরে আব্দুর জব্বারের পক্ষ নেন। এতে ক্ষুব্ধ ওই যুবলীগ নেতা বাদি হয়ে গত বছরের ২৮ অক্টোবর জব্বারসহ চারজনের নামে কালীগঞ্জ থানায় একটি সহিংসতার একটি কাল্পনিক মামলা (৩১নং) করেন। মামলা রেকর্ড করতে তিনি পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাকে দিয়ে তার এক আত্মীয়ের সহায়তা নেন।

একইভাবে গত বছরের ১২ অক্টোবর নিজের ঘেরে চুরির ঘটনা সাজিয়ে জব্বার সহ তার ছেলেকে জড়িয়ে আরো একটি মামলা (১৪নং) করেন। পুলিশে প্রভাব খাটিয়ে তিনি ওই দু’টি মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করাতে সমর্থ হন। একইভাবে শনিবার রাতে আব্দুর জব্বার বাড়িতে গেলে সাঈদ মেহেদী ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী প্রধান ফারুকের নেতৃত্বে মারপিট করে একটি নতুন মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
পরদিন সকালে থানায় এসে জব্বার তাকে (সাঈদ) হত্যার জন্য নিয়ে আসা পাইপ গান ও গুলি তারই চিংড়ি ঘেরের ডোবায় ফেলে দিয়েছে বলে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। এরই ভিত্তিতে উপপরিদর্শক শহীদুল্লাহ ওই ডোবায় তল্লাশি চালিয়ে কোন পাইপগান বা গুলি উদ্ধার করতে না পারার কথা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মোবাইল ফোনে অবহিত করেন।

এ সময় সাঈদ মেহেদী ছুঁটে এসে স্থান দেখিয়ে দেওয়ার পর সেখান থেকে পুলিশ তিন খন্ড পাইপ চার রাউন্ড রাইফেলের গুলি, তিন রাউন্ড গুলির খোসা ও তিন রাউন্ড পিস্তলের গুলি উদ্ধার করেন। এতে পুলিশ সাজানো নাটক বুঝতে পেরে ওইসব জিনিস উদ্ধারের ঘটনায় থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করে।
এ ব্যাপারে যুবলীগ নেতা সাঈদ মেহেদী তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, একটি মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।

কালীগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক শহীদুল্লাহ পাইপ ও গুলি উদ্ধারের ঘটনাটি সাজানো উল্লেখ করে বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করা হয়েছে।

(আরকে/জেএ/অক্টোবর ২০, ২০১৪)