গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : কলেজ প্রতিষ্ঠার দু'বছর পরই প্রথম ব্যাচের ফলাফলে চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় রীতিমত তাক্ লাগিয়ে সর্বত্র আলোচনার ঝড় তুলেছে বিটঘর দানবীর মহেশ ভট্টাচার্য বিদ্যাপীঠ (কলেজ) নামের একটি নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় এলাকায় 'বাজিমাত' করা ফলাফলপ্রাপ্ত ওই আলোচিত কলেজটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী বিটঘরে অবস্থিত। 

আজ বুধবার প্রকাশিত কুমিল্লা বোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, বিটঘর দানবীর মহেশ ভট্টাচার্য বিদ্যাপীঠ থেকে ৮৭ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এবার ৮৪ জনই পাশ করেছে। পাশের হার ৯৬ % এরও বেশী। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৭ জন পরীক্ষার্থী। তাক্ লাগানো এ ফলাফলের খবরে কলেজের পরীক্ষার্থী, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ গোটা বিটঘরে এলাকাবসির মাঝে এখন আনন্দের বন্যা বইছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিটঘর কাইতলা সড়কের পাশে এক মনোরম পরিবেশে নিজস্ব বিশাল জায়গায় (ক্রয়কৃত) ২০২০ সালে নান্দনিক অবকাঠামোয় দানবীর মহেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য বিদ্যাপীঠ নামের মহাবিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন এলাকার তরুণ শিল্প উদ্যোক্তা ও শিক্ষানুরাগী মুনতাসির মহিউদ্দিন অপু।

কলেজ সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠার প্রথম বছরেই একাদশ শ্রেণিতে ১৬৯ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হন। পরের বছর ভর্তি হন ১২৩ জন। প্রতিষ্ঠার পর কলেজে মোট শিক্ষক নিযোগ পান ১৭ জন।

কলেজের শিক্ষকেরা জানান, কলেজ প্রতিষ্ঠার পর প্রথম ব্যাচে ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় মোট ৮৭ জন পরীক্ষার্থী এরমধ্যে আজকের ফলাফলে ৮৪ জন পাশ করেছে। যাদের মধ্যে ১৭ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পাওয়ার গৌরব অর্জন করে।

প্রথম ব্যাচেই এমন ভালো ফলাফল অর্জনের পেছনে কি এমন ভূমিকা ছিলো? এমন প্রশ্নের উত্তরে কলেজ গভর্ণিং বডির সভাপতি প্রিন্সিপাল মোস্তফা কামাল বলেন, 'এখানে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবককে একসঙ্গে আমরা সম্পৃক্ত করতে পেরেছি বলেই এমন রেজাল্ট এসেছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো রুটিন মাফিক কলেজে নিয়মিত ক্লাশ শেষ হওয়ার পরও পরীক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমরা অভিভাবকদের সহযোগিতায় নিয়মিত হোম ওয়ার্ক করেছি। বলতে পারেন, এই ফলাফলের পেছনে শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদেরও জোরালো ভূমিকা রয়েছে। আর এলাকাবাসিরতো সর্বত সহযোগিতা ছিলোই।’

কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মুনতাসির মহিউদ্দিন অপু বলেন, 'এমন ফলাফলে আমি ভীষণ খুশী। কারণ এলাকার শিক্ষার প্রসারে আমি যখন লাখ লাখ টাকায় জমি কিনে আমাদের বিটঘরের অহংকার এ উপমহাদেশের প্রখ্যাত দানবীর মহেশ ভট্টাচার্যের নামে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করি, তখন অনেকেই নাক সিটকিয়েছেন। কিন্তু আজ এমন অভূতপূর্ব রেজাল্টের পর এখন সবাই খুশী। সেজন্য আমি কলেজ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। পাশাপাশি এলাকাবাসিসহ কলেজের শিক্ষকমন্ডলী, অভিভাবকমন্ডলী ও গভর্ণিং বডির সবাইকে অশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

প্রসঙ্গত, কলেজ প্রতিষ্ঠাতা মুনতাসির মহিউদ্দিন অপু হলেন, নবীনগরের সাবেক জনপ্রিয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান সভাপতি ফয়জুর রহমান বাদলের ভাই।

(জিডি/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২৩)