নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলা মডেল পাঠাগারের কার্যক্রম দৃশ্যমান না থাকলেও বেতন-ভাতা থেকে শুরু করে সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা হচ্ছে রীতিমত। এমন  অভিযোগ উঠেছে উপজেলা জুড়ে। বর্তমানে পাঠাগারের মডেল কেয়ার টেকার জরিফ উদ্দীনের বাড়ি উপজেলার ভবানীপুর খাঁন পাড়াতে অস্থায়ীভাবে অবস্থান করছে মডেল পাঠাগারটি।

আর পাঠাগারের নামে বরাদ্দকৃত দৈনিক পত্রিকা কেয়ার টেকারের বাড়ি উপজেলা চত্বর থেকে প্রায় ২০কিলোমিটার দূরে বেতগাড়ী বাজারে একজনের দোকানে নেয়া হয় মর্মে প্রতি মাসেই পাঠাগারের জন্য বরাদ্দকৃত পত্রিকার সম্পন্ন বিল দাখিল করে অর্থ উত্তোলন করা হচ্ছে। অথচ নিয়মানুসারে এই পাঠাগারটি উপজেলা পরিষদ চত্বরের বাহিরে স্থানান্তর করার কোন বিধান নেই। জায়গা না পাওয়ার অজুহাতে অবৈধ ভাবে পাঠাগারের নামে সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন মডেল কেয়ার টেকার ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা পরিষদে সেবা নিতে আসা সেবাগ্রহিতা, পরিষদের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও সকল শ্রেণির মানুষদের অবসর সময়ে বিভিন্ন বই, ম্যাগাজিন ও দৈনিক পত্রিকাসহ অন্যান্য গ্রন্থ পড়ার জন্য মসজিদ পাঠাগার সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের আওতায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে পরিষদ প্রাঙ্গনে উপজেলা মডেল পাঠাগার ছিল। দীর্ঘদিন থেকেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যোগসাজসে পাঠাগারের মডেল কেয়ার টেকারের বিরুদ্ধে নিয়মমতো পাঠাগারটি না খোলা, নিয়মিত দৈনিক পত্রিকা না নেয়া, সরকারের পক্ষ থেকে পাঠাগারে প্রদান করা অমূল্য ও দামী বইগুলোর যতœ না নিয়ে নষ্ট করাসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ লেগেই আছে।

এছাড়া তিনি এক মাদ্রাসায় চাকুরি করার কারণে পরিষদের পাঠাগারটি অধিকাংশ সময়ই বন্ধ থাকতো। যার কারণে পাঠাগারটিতে এসে বই, পত্রিকা কিংবা অন্যান্য গ্রন্থ পড়ে সময় কাটানোর কোন সুযোগই মিলতো না। আবার গত ২০২১সালে পাঠাগারের স্থানে উপজেলা ক্যান্টিন তৈরি করার পর থেকে উপজেলার কোন স্থানে উপজেলা মডেল পাঠাগারটির কোন দৃশ্যমান সাইনবোর্ড নেই যেখানে এসে কোন পাঠক বসে বই কিংবা পত্রিকা পড়বেন। পাঠাগারটির কার্যক্রম বর্তমানে উপজেলার কোন স্থানে চলমান রয়েছে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। তবে উপজেলা পরিষদের একটি পরিত্যক্ত কক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ ওই পাঠাগারের কিছু বই ও আসবাবপত্র জমা করে রাখা হয়েছে মাত্র। পাঠাগারে থাকা মূল্যবান বইগুলো কোথায় রাখা হয়েছে তারও কোন হদিস দিতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

পাঠাগারের মডেল কেয়ার টেকার জরিফ উদ্দীন বলেন, জায়গা না পাওয়ার কারণে পাঠাগারের অধিকাংশ আসবাবপত্র আমার বাড়িতে আর অবশিষ্ট উপজেলা পরিষদের একটি পরিত্যক্ত কক্ষে রাখা হয়েছে। আর দৈনিক পত্রিকা আমার বাড়ির কাছে বেতগাড়ী বাজারে কিছু নেয়া হয় আর অবশিষ্ট উপজেলা পরিষদের একটি স্থানে নেওয়া হয়। উপজেলা পরিষদের ভিতরে জায়গা দিলে আমি সেখানে গিয়েই আমার দায়িত্ব পালন করবো। বর্তমানে কোন জায়গা না পাওয়ার কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফিল্ড সুপারভাইজার মোহাম্মদ মুসা বলেন আমি মডেল কেয়ার টেকারকে একাধিকবার এই পাঠাগারটি উপজেলা পরিষদের পড়ে থাকা একটি কক্ষে সচল রাখার জন্য বলেছি। কিন্তু তিনি তা শোনেন না। আমরা বর্তমানে জায়গা না পাওয়ার কারণে পরিষদের ভিতরে একটি কক্ষের সামনে একটি টেবিল রেখেছি। কিন্তু সেই কক্ষটি ছোট্ট হওয়ার কারণে ভিতরে বসে পড়ার কোন অবস্থা নেই। যার কারণে নিয়মিত কক্ষটি খোলা হয় না। তবে আমি বিষয়টি দ্রুতই উর্দ্ধতন কর্তপক্ষকে জানাবো।

(বিএস/এসপি/মার্চ ২২, ২০২৩)