মেহেরপুর প্রতিনিধি : মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ষোলটাকা ইউপি সদস্য কামাল হোসেন হত্যা মামলায় পিতা-পুত্রের সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার সময় মেহেরপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রিপতি কুমার বিশ্বাস এ রায় ঘোষনা করেন। একই সঙ্গে আসামিদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। দণ্ডিতরা হলেন- মালেক জোর্দার ও তার ছেলে আলমগীর হোসেন।

মামলার বাকি ১০ আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- রহমত বিশ্বাস, সবাতুল্যাহ বিশ্বাস , রফাতুল বিশ্বাস , মাজেদুল জোয়াদ্দার, মাজহারুল ইসলাম, রাজু বিশ্বাস, শহিদুল ইসলাম, পিন্টু আলী, তমির ।

মামলার এজাহারে জানা গেছে, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ২০১৭ সালের ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আসামীরা রামদা, হাসুয়া, লোহার রড ও বাঁশের লাঠি সংগে নিয়া বে-আইনি জনতাবদ্ধ হইয়া ষোলটাকা গ্রামের কফেল উদ্দীনের বাড়িতে অনধিকারভাবে প্রবেশ করে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করে। এসময় কফেল উদ্দিন বাম হাত দিয়া ঠেকাইলে বাম হাতের কনুইয়ের নিচে লাগিয়া মারাত্মক রক্তাক্ত জখম হয়। আসামী গনি রামদা দিয়া চাচার ডান হাতে কোপ মারিয়া রক্তাক্ত জখম করে। আসামী সবাতুল খুন করার উদ্দেশ্যে বাঁশের লাঠি দিয়া মাথার উপর বাড়ী দিয়া রক্তাক্ত জখম করে। অন্যান্য আসামীরা কফেল উদ্দিনকে লাথি ও কিল ঘুষি মারিয়া নীলাফুলা জখম করে।

পরে সকল আসামী খুন জখমের হুমকি দিয়া চলিয়া যায়। খবর পেয়ে কফেল উদ্দিনের ভাই ইউপি সদস্য কামাল হোসেন মোটর সাইকেল যোগে বাড়িতে আসার সময় পথিমধ্যে আসামী আঃ মালেকের বাড়ীর সামনে পৌছালে সকল আসামীরা তার মোটর সাইকেল ঘিরিয়া ধরে এবং আলমগীর তাহার হাতে থাকা ধারালো রামদা দিয়া মাথায় কোপ মারলে তিনি রক্তাক্ত জখম হন। তাকে উদ্ধার করে গাংনী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কামালকে মৃত ঘোষনা করেন। এদিকে, কফেল উদ্দীন গুরুতর জখম হওয়ার তাকে গাংনী হাসপাতাল থেকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে এবং পরে উন্নত চিকিৎসর জন্য কুষ্টিয়া মেডিকলে কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে।

পরদিন কামাল হোসেনের ভাতিজা ফারুক হোসেন বাদী হয়ে গাংনী থানায় ১২ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রাথমিক তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই শহিদুল ইসলাম শেখ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

মামলায় ৯ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন। মামলার নথি, তদন্ত প্রতিবেদন ও দীর্ঘ শুনানী শেষে বিজ্ঞ বিচারক ১২ আসামীর মধ্যে দুইজনকে সশ্রম কারাদণ্ড এবং অপর ১০ আসামীকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর কাজী শহিদুল হক এবং আসামী পক্ষে এ কে এম শফিকুল আলম আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেন।

(এস/এসপি/মার্চ ২৩, ২০২৩)