বরগুনা প্রতিনিধি : বরগুনার বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ঔষধাগার সিলগালা করে দেওয়ায় হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগি ও বহির্বিভাগের রোগি সাধারণ গত এক মাস ধরে ওষধ থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে।

হাসপাতালের স্টোর কীপারের বদলি জটিলতার প্রশাসনিক ফাদে পড়ে গত ২১ সেপ্টেম্বর হাসপাতালের ঔষধাগার সিলগালা করে দেওয়া হয়। নিয়মিত ঔষধ সরবরাহের কোন ব্যবস্থা না করে কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের ঔষাধাগারটি তালাবদ্ধ করে দেয়। ফলে হাসপাতালের প্রতিদিনের যাবতীয় ঔষধ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে। রোগিরা জীবন রক্ষাকারী ঔষধ না পেয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বামনা হাসপাতালে কর্মরত স্টোর কিপার মো. আব্দুল খালেক হাসপাতালের ভেতর ব্যক্তিগত গ্যারেজ বসিয়ে সরকারি বৈদ্যুতিক লাইন ও জেনারেটর দিয়ে আটোরিক্সা ও মাহেন্দ্র গাড়ির ব্যাটারীর চার্জসহ গাড়ি মেরামতের ব্যবসা করার অভিযোগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাকে গত ১৪ সেপ্টেম্বর বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. আবদুল ওহাব হাওলাদার এক চিঠিরে আদেশে অভিযুক্ত স্টোর কীপারকে বরগুনা জেলা সদর হাসপাতালে প্রেষণে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ দেন।

তাকে এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই বদলির আদেশের পর অভিযুক্ত ষ্টোরকীপার কর্মস্থলে যোগদান না করে দেন দরবার শুরু করেন। এরপর বদলির আদেশের ১০ দিন পরে ওই কর্মকর্মকর্তা আবার তার বদলির আদেশ স্থগতি করেন। গত ২৯ সেপ্টেম্বর স্টোরকীপারকে দ্বিতীয় দফায় বরগুনা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে বদলি করা হয়। ওই আদেশের পর স্টোরকীপার নুতন কর্মস্থলে যোগদান না করে গত ৯ অক্টোবর অসুস্থতার কারন উল্লেখ করে ১৪ দিনের ছুটির আবেদন পত্র ডাকযোগে বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বরাবরে পাঠান।

স্টোরকীপারের এ বদলী জনিত প্রশাসনিক জটিলতারম মধ্যে বামনা হাসপাতালের ঔষাধাগারটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়ে। স্টোরকীপার না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঔষধ স্টোর থেকে বের করে সরবরাহ তরতে পারছেন না। ফলে রোগিদের ঔষধ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে।

হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, এমন অবন্থায় ঔষাধাগারটি আপাতত হাসপাতালের অফিস সহকারিকে দায়িত্ব দিতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে স্টোরের যাবতীয় মালামাল ইনভেনটরী বোর্ডের মাধ্যমে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে গত ৯ অক্টোবর বরগুনা জেলা সিভিল সার্জন জেলা প্রশাসশের কাছে একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট চেয়ে পত্র প্রদান করেন। অদ্যবধি একজন ম্যাজিষ্ট্রেট না পাওয়ায় স্টোর হস্তান্তরে জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে।

হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট কারুন্নাহার বলেন,গত ৩০ সেপ্টেম্বর এর পর হাসপাতালের স্টোর হতে কোন ঔষধ সরবরাহ না পাওয়ায় হাসপাতালের রোগিদের ঔষধ বিতরণ করা যাচ্ছে না। বরগুনা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. আনিসুর রহমান বলেন, বিষয়টি এখন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের এখতিয়ারভূক্ত। ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োগ ছাড়া এর সমাধান করা সম্ভব নয়।

এ বিষয়ে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. আবদুল ওহাব হাওলাদার বলেন, বিষয়টি দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।

(এমএইচ/জেএ/অক্টোবর ২৩, ২০১৪)