এটিএম রাশেদুল ইসলাম, বগুড়া : নওগাঁয় র‌্যাব হেফাজতে ভূমি অফিসের অফিস সহকারী সুলতানা জেসমিন-এর মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে এবং তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা সহ বিচার বহির্ভূত সকল হত্যাকান্ডের বিচারের দাবিতে- বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ বগুড়া জেলা শাখার উদ্যোগে মনববন্ধন-সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

গতকাল বুধবার বেলা বারোটায় বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদী কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ বগুড়া জেলা শাখার আহ্বায়ক কমরেড অ্যাড. সাইফুল ইসলাম পল্টু। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ বগুড়া জেলা সদস্য সচিব কমরেড অ্যাড. দিলরুবা নূরী, সদস্য সাইফুজ্জামান টুটুল, মাসুদ পরভেজ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বগুড়া জেলা আহ্বায়ক ধনঞ্জয় বর্মন প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।

কমরেড অ্যাড. সাইফুল ইসলাম পল্টু তার বক্তব্যে নওগাঁয় র‌্যাবের হেফাজতে সুলতানা জেসমিন নামের এক নারীর মৃত্যুতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, র‌্যাবের উপর মার্কিন নিষেধজ্ঞা জারীর পর বিচার বহির্ভূত হত্যা এবং হেফাজতে মৃত্যু পুরো বন্ধ না হলেও কিছুদিন কমেছিল। যা আবার ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। র‌্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিন-এর মৃত্যু বিচার বহির্ভূত হত্যারই আরেক রূপ। অতীতে বিচার বহির্ভূত হত্যা এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যুর কোন ঘটনার আইনী প্রক্রিয়ায় বিচার ও দোষীদের শাস্তি না হওয়ার জন্যই বার বার এ ধরনের হত্যা ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটে চলেছে। কয়েক দিন আগেও গভীর রাতে আসামী ধরতে যাওয়ার নামে সোনারগাঁও এ র‌্যাব গুলি করে একজনকে হত্যা করেছে। বিচার বহির্ভূত হত্যা ও হেফাজতে মৃত্যু নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকারের উপর চরম আঘাত। সমাবেশে তিনি আরও বলেন বিচার বহির্ভূত হত্যা ও হেফাজতে মৃত্যু বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।

কমরেড অ্যাড. দিলরুবা নূরী তার বক্তব্যে- সরকারি হাসপাতালে বেসরকারি চিকিৎসা চালুর সরকারি সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয় এর মাধ্যমে নাগরিকের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার দায়িত্ব রাষ্ট্র ও সরকার অস্বীকার করে চিকিৎসা ব্যবস্থার বেসরকারিকরণ করতে চাওয়ারই ইঙ্গিত বহন করছে। সমাবেশে সরকারি হাসপাতালে বেসরকারি চিকিৎসা চালু না করে সরকারি ব্যবস্থাপনায়ই সরকারি হাসপাতালে দুই শিফটে চিকিৎসা দেয়ার দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে অন্যান্য নেতৃবৃন্দ দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান উর্ধ্বগতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সরকার ১ কোটি মানুষকে কার্ডের মাধ্যমে টিসিবি’র পণ্য সরবরাহের কথা বলছে, যা খুবই অপ্রতুল এবং দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজপ্রীতিতে ভরা। ফলে প্রকৃত অর্থে যাদের স্বল্পমূল্যে নিত্যপণ্য পাওয়ার কথা অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা পাচ্ছে না। কার্ডের সংখ্যা ও পণ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি করে অনিয়ম-স্বজনপ্রীতিমুক্ত ভাবে স্বল্পমূল্যে পণ্য সরবরাহের দাবি জানানো হয়। একই সাথে গ্রাম-শহরে রেশনিং ও ন্যায্য মূল্যের দোকান চালুর দাবি জানানো হয়।

(এটিআর/এসপি/মার্চ ৩০, ২০২৩)