স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার মহম্মদপুর আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা গনেশ, ক্লান্ত দুপুরে ঘরে শুয়ে ছিলেন। হঠাৎ হৈচৈ শুনে বাইরে এসে দেখেন ঘরে দাউ দাউ আগুন জ্বলছে। বুঝে ওঠার আগেই পুড়ে গেছে ঘরে থাকা নানা আসবাবপত্র, টাকা-পয়সা, টিনশেডের রান্নাঘর ও গোয়ালঘর। শুধু গনেশই নয়, এমন ৫-৬টি পরিবারের মাথা গোজার ঠাই নিমিশেই ভস্মিভুত হয়। পরে আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন।

খবর পেয়ে শৈলকূপা ও ঝিনাইদহ ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিটের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌছে দেড় ঘন্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

গত ১বছর আগে এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। সম্প্রতি মানুষগুলো নিজ নিজ ঘর বুঝে পেয়ে বসতি শুরু করেছে। কিন্তু সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ার আগেই ঘর-বাড়ি হারিয়ে পড়েছেন অথৈ সাগরে। গতকাল শনিবার দুপুরে লাগা এ আগুনে প্রকল্পের ৩০ টি ঘরের মধ্যে ২০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০টি ঘর।

বেশীরভাগ বসতির সামনের অংশের টিনশেডের রান্নাঘর, গোয়ালঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এদিকে অগ্নিকান্ডের সময় হুড়োহুড়ি করে মালামাল সরাতে গিয়ে শিশু সজিব তার পিতা তাহের সহ ৩ জন আহত হয়েছন। সজিব ও তাহের কে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পে আগুনে ঘরের আসবাবসহ সবই পুড়ে গেছে খোকন-সাবিনা দম্পতির। ২

২০ নাম্বার ঘরের বসতি সাবিনা খাতুন জানান, শুধু ঘর থেকে একটি ভ্যান সরাতে পেরেছেন, আর সবই পুড়ে গেছে। আগুন নেভাতে আসা প্রত্যক্ষদর্শী মো: হাশেম জানান, দূর থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে শুধু আগুন আর আগুন দেখতে পেয়ে দৌড়ে নেভাতে চেষ্টা করেন এবং ফায়ার সার্ভিস কে খবর দেন। আগুনে ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, মুহূর্তেই আগুনে সব পুড়ে গেছে। সন্তানদের ছাড়া আর কোন মালামাল সরাতে পারেননি।

শৈলকূপা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার সনজয় কুমার দেবনাথ জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের শৈলকূপা শাখার দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে, পরে ঝিনাইদহ থেকে আরো দুটি ইউনিট যোগ দেয়। আশপাশে পানির স্বল্পতা থাকায় বেগ পেতে হয় আগুন নিয়ন্ত্রণে। রান্নার চুলা থেকে আগুনের সুত্রপাত হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করছে ফায়ার সার্ভিস।

শৈলকূপা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা রাজিয়া আক্তার চৌধুরী জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পে লাগা আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস। তিনি বলেন ঘটনার পরপরই জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলামসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে, তাদের প্রাথমিকভাবে খাবার সহায়তা দেয়া হয়েছে। এরপর ক্ষতিগ্রস্ত ঘর দ্রুত নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে।

(একে/এএস/এপ্রিল ০৯, ২০২৩)