স্পোর্টস ডেস্ক, ঢাকা : কোনোটিতে রিয়াল মাদ্রিদ, কোনোটিতে এগিয়ে থাকবে বায়ার্ন মিউনিখ। ক্যানভাসটা বড় করে দেখলে যে ছবি দাঁড়ায়, সেটির মর্মার্থ নিয়ে অবশ্য দ্বিমত থাকার লোক খুব বেশি নেই। চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালের এ দ্বৈরথটি দাঁড়িয়ে আছে ঠিক সাম্যাবস্থায়। আজ দ্বিতীয় লেগের আগে ফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা কিংবা সেমি থেকে ছিটকে পড়ার সমান আশঙ্কা বহমান দুই ক্যাম্পেই। রিয়াল মাদ্রিদে যেমন, তেমনি বায়ার্ন মিউনিখেও।

তবে ‘মরিয়া’ মনোভাবের কথা যদি বলেন, তাহলে সেটি বেশি স্প্যানিশ ক্লাবটিতে। আর সেটি অনুমেয় কারণে। সেই কবে, এক যুগ আগে চ্যাম্পিয়নস লিগের সর্বশেষ ট্রফিটি জিতেছিল তারা। এরপর আর উঠতে পারেনি ফাইনালেই। চার-চারবার ছিটকে গেছে সেমিফাইনাল থেকে, যার মধ্যে আছে সর্বশেষ তিন আসরও। ‘লা দেসিমা’র স্বপ্ন তাই এখনো অধরা মাদ্রিদের। বায়ার্ন মিউনিখ ক্যাম্পে এমন মরিয়া অবস্থা ছিল গতবার। তিন মৌসুমের মধ্যে দুটি ফাইনালে হার কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না তারা। গতবার ট্রফি জিতে ঘুচিয়েছে সেই হতাশা। ইতিহাসের দায়শোধে সেই হতাশা ঘোচানোর কক্ষপথে আজ কি বড় এক পদক্ষেপ এঁকে দেবে রিয়াল মাদ্রিদ!


তাদের আশাবাদী হওয়ার মতো অনেক কিছু আছে। প্রথমত, প্রথম লেগের ১-০ ব্যবধানের জয়। দ্বিতীয়ত, আক্রমণের ত্রয়ী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো-গ্যারেথ বেল-করিম বেনজিমার পূর্ণ ফিট হয়ে প্রথম একাদশে প্রত্যাবর্তন। প্রথম লেগে প্রথম থেকে খেলতে পারেননি বেল, রোনালদো খেলেছেন ৫০ শতাংশ ফিটনেস নিয়ে। ওই ম্যাচের পর সংশয় জেগেছিল জয়সূচক গোলদাতা বেনজিমাকে নিয়েও। অবশ্য সব সংশয় উড়িয়ে আজ এই ‘বিবিসি’ ঠিকই নামছেন। নামছেন রিয়াল মাদ্রিদের স্বপ্নঘুড়িকে ভোকাট্টা থেকে বাঁচিয়ে আরো উঁচুতে তোলার অভিযানে। ক্লাবের প্রায় সবার মনের কথাটি বলেছেন ডিফেন্ডার সের্হিয়ো র‌্যামোস, ‘চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতাটা আমার স্বপ্ন। এটি বাদে পেশাদার ফুটবলে সম্ভাব্য প্রায় সব শিরোপাই জিতেছি আমি। এটি নিয়ে যে ঘোরের মধ্যে আছি কিংবা এর প্রতি বিশেষ ভালোবাসা আছে, তা না। তবে যখন দেখবেন আপনার অর্জনের তালিকায় একটি ট্রফি নেই, তখন সেটি মনোযোগ কাড়তে বাধ্য।’

বায়ার্ন যদি মিউনিখে আজ ছিটকে পড়ে তাহলে সেটি মনোযোগ কাড়বে সমালোচকদেরও। ইয়ুপ হাইঙ্কেস গতবার দলটিকে জিতিয়েছেন ত্রিমুকুট। ভিন্ন ফুটবল-দর্শনে সেই দলটি যদি এবার ব্যর্থ হয়, সমালোচনার ছুরি বেরিয়ে আসবে তখন কোচের দিকে। ওই পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টার প্রতিশ্র“তি গার্দিওলার কণ্ঠে। তাগিদ দিয়েছেন তিনি আক্রমণাÍক ফুটবলের দিকে, ‘বার্নাব্যুতে অ্যাওয়ে গোলটা চাইছিলাম খুব করে। সেটি না হওয়ায় এখন আমাদের আরো বেশি আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। তবে একই সঙ্গে রিয়ালের কাউন্টার অ্যাটাক নিয়েও সতর্ক থাকতে হবে।’

(ওএস/পি/এপ্রিল ২৯,২০১৪)